ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্লট বরাদ্দে অনিয়ম, অবরুদ্ধ দিনাজপুর গৃহায়ণ কার্যালয় 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
প্লট বরাদ্দে অনিয়ম, অবরুদ্ধ দিনাজপুর গৃহায়ণ কার্যালয় 

দিনাজপুর: গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ ও ক্ষতিগ্রস্তদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্লট বরাদ্দের দাবিতে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর বিভাগীয় কার্যালয় ৮ ঘণ্টা অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন প্লাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেন দুই শতাধিক নারী-পুরুষ।

বিকেল পাঁচটায় তাদের এই কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

এ সময় কার্যালয় থেকে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বের হতে এবং বাহির থেকে কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।  

অবরোধ চলাকালীন সময়ে সময়ে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ের ২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এলেও তাদেরও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারিও দেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীরা।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা পৈত্রিক সম্পত্তিতে বসবাস করছেন। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা করেই ওই জমিগুলোই এখন লটারির মাধ্যমে প্লট আকারে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে পূর্ব-পুরুষদের ওয়ারিশগণ গৃহহীন হয়ে পড়বেন। সরকার যেখানে গৃহহীনদের জন্য বাড়ি উপহার দিচ্ছেন সেখানে এই এলাকার বসবাসকারীদের গৃহহীন করার পাঁয়তারা চলছে। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্লট বরাদ্দে এক প্রকারে দুর্ণীতির আশ্রয় গ্রহণ করা হয়েছে।  

তারা আরো জানান, শরণার্থীদের পুর্ণবাসনের উদ্দেশে ১৯৬০-৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার গৃহায়ন কর্তৃৃপক্ষের আওতায় দিনাজপুর উপশহর এলাকার ৩৬৪ একর জমি জোরপূর্বক হুকুম দখল করেন। ওই সময়ে ওইসব জমিতে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ শরণার্থীদের পূর্ণবাসনের জন্য কোয়ার্টার নির্মাণ করেন। তখন এলাকাবাসী জানতে পারেন যে, সরকার তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ও বসতবাড়ির জমি হুকুম দখল করেছেন। এরপরে তারা জায়গাগুলো অবমুক্ত (ডি-রিকুইজিশন) করার জন্য বারবার আবেদন করেন।  

এরই মধ্যে ২০১৮ সালে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ৬১টি প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন গ্রহণ করে। সেই আবেদনগুলোর লটারির তারিখ নির্ধারণ করা হয় রোববার ১৬ জানুয়ারি ২০২২। এই বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা ওইসব প্লটগুলো নিজেদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের প্লটগুলো বরাদ্দ দেয়নি।

নির্ধারিত দিনেই লটারি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিনাজপুরে আসেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মাহমুদুল্লাহ ও মোহাম্মদ আশরাফ। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ লটারির কার্যক্রম স্থগিত রাখেন। বিকেল ৩টার দিকে ওই কর্মকর্তারা গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলেও স্থানীয়রা বাধা প্রদান করে। ফলে তাদের ফেরত যেতে হয়। এসময় দিনাজপুর গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের প্লট বরাদ্দের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা জানান এলাকাবাসী।
 
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দিনাজপুর বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে এলাকাবাসীরা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। অর্থাৎ অধিগ্রহণের সময়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় সেটি দেখাতে পারেন নাই। তাছাড়া আমরা প্লট বরাদ্দের যে প্রক্রিয়াটি গ্রহণ করেছি সেটি সম্পূর্ণ সরকারি নিয়মেই করেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।