ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আশ্রয়ণ প্রকল্পে বহুতল ভবন চায় না সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বহুতল ভবন চায় না সরকার

ঢাকা: মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ছিন্নমূল পরিবারগুলোকে আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করছে সরকার। এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের বহুতল ভবন করার প্রস্তাব করেছিল জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)।

তবে প্রস্তাবটা বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় কার্যঅধিবেশনে এ প্রস্তাব করেন ডিসিরা।  

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাঠামো নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ডিসিদের পক্ষ একটি প্রস্তাব ছিল বহুতল ভবন করা যায় কিনা। বহুতল ভবন করলে সেটি স্থায়ী হবে আপনারা সবাই বুঝতে পারেন। কেন করি না সেটা হচ্ছে যে, একটা বহুতল ভবন করতে যে টাকা খরচ হবে তাহলে প্রধানমন্ত্রীর যে প্রত্যাশা বা নির্দেশনা বাংলাদেশে মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। সেক্ষেত্রে কিন্তু ওটাকে কাস্টমাইজ করার জন্য এ প্রস্তাবটা বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। বহুতল ভবন করা মানে হচ্ছে এখানে ৫০ বছর থাকা।

তিনি বলেন, ছিন্নমূল পরিবার যেগুলো আছে তাদের আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এভাবে যে তারা ট্রানজিশনে যাবে, এখান থেকে পরবর্তীতে তার উত্তোরণ ঘটবে। সেজন্য আমরা স্থায়ী কাঠামোতে যাইনি। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ডিসিদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সেই নির্দেশনাগুলো পালন করে বাস্তবায়ন করা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে আট জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোথায়ও দুর্নীতির নজির নেই, এটা আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি। ১ লাখ ৩০ হাজার বাড়ির ভেতরে ৩০টি বাড়িরই হয়েছে এবং আট জায়গায় কর্তব্যে অবহেলা পেয়েছি। পয়সা মারার জন্য দুর্নীতি করেছে তেমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। আমি খুব গর্বের সঙ্গে বলতে পারি আমাদের সহকর্মীরা এটি আত্মার সঙ্গে এবং এটাতে আত্মস্থ হয়ে কাজটা করেছেন। সেজন্য আমার জুনিয়র যারা কর্মকর্তা আছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এটার জন্য আমি কিছুটা আবেগ আপ্লুত। বাজেট বাড়ানো হয়েছে। গতবার এটা ১ লাখ ৭১ হাজার ছিল, এখন এটা আড়াই লাখ করা হয়েছে।

কৃষি জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আহমদ কায়কাউস বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কোনো বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে না। আশ্রয়ণ প্রকল্প ৯৯ বছরের জায়গায় ৩০ বছরের নীতিমালা প্রস্তাব করেছিলেন, সেটা পরিবর্তন করা হচ্ছে না।

কাজ করতে গিয়ে ডিসিরা কোনো প্রতিবন্ধকতায় পড়ছেন কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, কাজ করতে গিয়ে ডিসিরা কোনো প্রতিবন্ধকতার কথা বলেননি। করোনা মহামারির মধ্যে ডিসি থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা সমন্বয়ে অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এজন্য আমি গর্ববোধ করি। সামরিক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে কাজ করেছেন সেজন্য আমি গর্বিত।  

আমলাদের সম্পর্কে একজন সংসদ সদস্য সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন। আপনার মন্তব্য কী, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার বক্তব্য দেওয়া উচিত না।  

এর আগে সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিসি সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার। পরে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এবার ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৬৩টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

মহামারির কারণে দুই বছর পর এ সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলন শেষ হবে আগামী ২০ জানুয়ারি। সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতিবছর ডিসি সম্মেলন করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।