ঢাকা: ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আয় বাড়ানো ও শক্তিশালী করার জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
ডিসি সম্মেলনের প্রথম দিন মঙ্গলবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তৃতীয় অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা তাদের মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরেছেন, কিছু কিছু প্রস্তাবও এসেছে। সেখানে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করার জন্য কী ব্যবস্থাপনা হাতে নেওয়া যায় সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পৌরসভাকে শক্তিশালী করা এবং গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য সেখানে আলোচনা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু সমস্যা আছে, সেখানে অবকাঠামো নির্মাণে স্বাভাবিক জায়গার চেয়ে বেশি ব্যয় হয়। সেগুলোর জন্য আরও বেশি বরাদ্দ দেওয়ার কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি রাষ্ট্রের সব জায়গায় সমভাবে আয় বড়ানোর ব্যবস্থা নেই। কিছু কিছু জায়গায় কম হয়। সেখানে যাতে ভর্তিুকি দেওয়া হয় সেই প্রসঙ্গ এসেছে। এগুলো যৌক্তিকতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য বলা হয়েছে।
আয় বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আয় এবং তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাদের কিছু কর্মচারী লাগবে। ইইপতে আরও লোকবল লাগবে, এটি করতে গেলে তাদের আয় বাড়াতে হবে। আয় বাড়ানোর জন্য এখানে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের ক্ষেত্র একেক জায়গায়, একেক রকম। সব জায়গার প্রটেনশিয়ালিটি এক রকম না। পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা যদি বলি তাহলে সেখানকার জনগণের আয় এবং ডেনসিটি কম। সেখানে হয়তো আমাদের ভর্তুকি দিতে হবে। আবার অনেক ইউনিয়নে শিল্প কারখানা আছে, সেখানে আয় বেশি হবে। যেখানে আয় নেই, সেখানে আয় বাড়াতে কী দরকার সরকারকে তারা যেন তা জানায়। তাহলে সরকার সেখানে আয় বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো নেবে।
তিনি বলেন, এখানে শক্তিশালী অর্থ হলো তাদের আয় বাড়ানো। আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করেছি, জনগণের আয় বাড়ানো সরকারের দায়িত্ব। জনগনের আয় বাড়লে সেখান থেকে একটি অংশ সরকার পাবে রাজস্ব আকারে। সেটা সবার কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। সেখানে জেলা প্রশাসকসহ তাদের স্ব স্ব এলাকায় যে প্রটেনসিয়ালিটি আছে সেগুলো আমাদের যাতে তারা পাঠায়। আর মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক যারা কাজ করেন। তাদের অভিজ্ঞতা আছে, যেহতু তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশেন। মানুষের কী সমস্যা, আর কাজ করতে গিয়ে কী কী অসুবিধা হয় সবগুলো চিহ্নিত করবেন। সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে আমরা এতটি কম্প্রিহেনসিভ এফোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করব।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সকালে এ কথাগুলো বলেছেন, আমিও আমার বক্তৃতায় গুরুত্ব দিয়েছি। আমি বলেছি জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন পেশাজীবীরা সবাই মিলে সম্মিলিত ভাবে বাংলাদেশের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকরা খুবই আন্তরিক বলে মনে হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা, আমরা আমাদের লক্ষ্যে দ্রুত পৌঁছাতে পারব।
ইউএনও-উপজেলা চেয়ারম্যান দ্বন্দ্ব: এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, সব জায়গায় একই রকম সমস্যা হয় এটা বলা যাবে না। অনেক জায়গায় ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যান একসঙ্গে অনেক ভালো ভাবে কাজ করছেন। আবার কোথাও সমস্যা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে যেখানে যেখানে জটিলতা আছে সেখানে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, আর আমি নিজেও এটাকে গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের সবাইকে বিশ্বাস করতে হবে। এখানে কোনো বিতর্ক করার সুযোগ নেই। জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, শিক্ষক সবার প্রয়োজন আছে। কৃষকদেরও উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। সবারই প্রয়োজন আছে। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
রাজনীতিকদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্ব: মন্ত্রী বলেন, দেশটা পরিচালিত হয় রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে। রাজনীতিতে নীতি তৈরি করা, আইন তৈরি করা, জনগণের দাবি আদায় করা, প্রশাসনিক কর্মকতাদের অধিকার আদায় করা সবার জন্যই রাজনীতি প্রয়োজন। রাজনীতির সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কোথাও কোথাও ব্যক্তিগত ভাবে সমস্যা তৈরি হলে এটাকে অবশ্যই রাষ্ট্র নিরসন করবে। এই অঙ্গীকার রাষ্ট্রের আছে এবং আমরাও অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের জেলা প্রশাসক যারা দূর-দূরান্তে বিভিন্ন জায়গায় যাবেন, তারা যেন শান্তিপূর্ণ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন এজন্য রাষ্ট্র অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা,১৮ জানুয়ারি, ২০২২
এমআইএইচ/এমএমজেড