নড়াইল: ছেলে-বউমার অত্যাচারে গোয়াল ঘরে থাকা ৯২ বছরের এক বৃদ্ধা মা ফিরে পেয়েছেন তার নিজ ঘর।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বাবরা হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে ৯২ বছর বয়সী শাহাজাদী বেগমকে নিজ ঘরে তুলে দেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলা প্রশাসন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেন শেখের স্ত্রী শাহাজাদী বেগমের দুই ছেলে রফিকুল শেখ (৫০) ও শরিফুল শেখ (৪৫) তাদের মা সহ একটি ঘরের তিনটি রুমে আলাদাভাবে বসবাস করতেন। কিন্তু দুই ভাইয়ের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ৭ জানুয়ারি ছোটভাই শরিফুল শেখ ও তার স্ত্রী মিলে বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগম ও বড় ভাই রফিকুল শেখকে দুইটি শিশু সন্তানসহ জোরপূর্বক ঘর থেকে নামিয়ে দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে বৃদ্ধা মা ও শিশু সন্তানদের নিয়ে বাড়ির পাশের গোয়াল ঘরে আশ্রয় নেন ভাই রফিকুল শেখ।
তীব্র শীতে বৃদ্ধা মায়ের গোয়াল ঘরে বসবাসের খবর কালিয়া উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) তারা ওই বাড়িতে আসেন। শরিফুল শেখ ও তার স্ত্রীকে বুঝিয়ে বৃদ্ধা মা সহ পরিবারের সবাইকে বসত ঘরে তুলে দেন।
বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগম বাংলানিউজকে জানান, ‘আমার ছোট ছেলে ও বিটার বউ আমারে, বড় ছেলেকে ও পুতাদের ঘর থেকে তাড়িয়ে গুয়াল ঘরে থাকতে দিছিল। যারা আমারে আবারো ঘরে থাকতি ঠিক করে দিছে, আল্লাহ তাদের ভাল রাখুক। ’
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত ঝামেলা রয়েছে। তার সূত্রধরে ছোট ভাই শরিফুল শেখ বৃদ্ধা মা ও তার বড় ভাইকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল। তারা উপায় না পেয়ে গোয়াল ঘরে থাকতে শুরু করেছিল। বিষয়টি খুবই অমানবিক। আমরা জানার পর আজই তাদের ঘরে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে যদি আদালতে মামলা চলমান না থাকে তাহলে আগামী রোববার শুনানি করে স্থায়ী সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। যেখানে প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের থাকার জন্য জায়গাসহ ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন সেখানে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া কষ্টকর।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জহুরুল ইসলাম, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু রায়হান ও কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কনি মিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২২
এনটি