নরসিংদী: পূর্ব শত্রুতা ও ঝগড়াকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর মাধবদীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে মাধবদী থানার নুরালাপুর ইউনিয়নের মাটিয়ালকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাজারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আহতদের মধ্যে মেহেদি হাসান (২৫) নামে এক যুবক গুরুতর জখম হয়েছেন। তিনি মাটিয়াল কান্দা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন রশিদ ওরফে হারুন মেম্বারের ছেলে। এ ঘটনায় মেহেদির বাবা হারুন রশিদও গুরুতর আহত হন। বাকি আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, নুরালাপুর ইউনিয়নের মাটিয়ালকান্দা ও শ্যামতলী গ্রামের মধ্যে একটি ঈদগাঁহ মাঠ নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। ২০১৭ সালের একটি সংঘর্ষের ঘটনায় দুই গ্রামবাসী পাল্টা পাল্টি থানায় মামলা দায়ের করেন। শ্যামতলী গ্রামের দায়ের করা মামলায় আসামি ছিলেন- নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান ভূঞা, তার ভাই আকবর, নাসির, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারর তার ভাই আজহারের নামে মামলা করা হয়। মামলায় আসামির তালিকা থেকে সাদেকুর ও তার ভাইদের নাম বাদ গেলে ও নাম থেকে যায় হারুন ও তার ভাই আজহারের। পরে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মামলার দুই পক্ষই আপোষে যায়। এরপর নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের কারণে বেধে যায় সাদেকুর রহমান ও হারুন মেম্বারের মধ্যে। দু’পক্ষই মামলার নিষ্পত্তি ও আপোষনামা নিয়ে গরমিল হচ্ছিলো গত কয়েকদিন ধরে।
এরই জেরে শনিবার দুপুরে দু’পক্ষই দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা করে। এসময় মাটিয়াল কান্দা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন মম্বারের ছেলে মেহেদির পায়ে গুলি লাগে এবং দু’পক্ষের আরও চারজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠির আঘাতে আহত হয়। পরে তাদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
আহত হারুন মেম্বার বাংলানিউজকে বলেন, মামলা কেন আপোষে গেলাম এ কারণে সাদেকের ভাই আকবর ও তার লোকরা আমাকে কয়েকবার রাস্তায় আটকিয়েছে। তাদের মামলায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে এই টাকা আমার কাছে দাবি করে। আজকে ও দুপুরে বাড়িতে যাওয়ার সময় তারা আমাকে ডাক দেয়। আমি সাড়া না দিয়ে বাড়িতে চলে যাই।
নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান ভূঞার ছোট ভাই নাসির ভূঞা বাংলানিউজকে বলেন, দুইপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। হারুন মেম্বারের বাড়ির পাশ দিয়ে আমাদের বাড়িতে যেতে হয়। আজকে ওরা আমাদের আটকালে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এতে আমাদের ও কয়েকজন আহত হয়েছে।
নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাজারুল ইসলাম বলেন, মেহেদি নামে ওই যুবকের পায়ে গুলি লেগেছে বলে জানি আমি। এছাড়া দু’পক্ষের প্রায় ৪-৫ জন আহত আছে।
নুরালাপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম বলেন, এখন কোনো ঝামেলা নেই। এলাকায় পুলিশ আছে, পরিবেশ এখন শান্ত।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আসাদ আবদুল্লাহ খান বলেন, হাসপাতালে মারামারিতে আহত বাবা-ছেলেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। ছেলের ডান পায়ে একটা ক্ষত আছে। কিন্তু এটা আসলেই গুলি কি না। তা নিশ্চিত নই এখনও। পরিবারের দাবি গুলি করা হয়েছে, কিন্তু আমরা ভেতরে ও এক্সরে রিপোর্টে কোনো গুলি পাইনি।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সৈয়দুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, মারামারি হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত আছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। কিন্তু কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন শুনিনি আমি।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
এনটি