বরিশাল: ১০ লাখ টাকা চাদা দাবি ও ভুয়া সনদ দেখিয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধ সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক রিকশাচালক।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী মো. নুরুল ইসলাম।
অভিযুক্ত কাউন্সিলর মো. জাহিদুল ইসলাম (জুয়েল তালুকদার) বরগুনা জেলার আমতলী পৌরসভার খোন্তাকাটা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মলনের লিখিত বক্তব্যে রিকশাচালক নুরুল ইসলাম বলেন, রিকশা চালিয়ে যা উপার্যন হয়, তা দিয়ে কোনোমতে আমার সংসার চলে। আমার ভিটেমাটি দখলের জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বরগুনার আমতলী পৌরসভার খোন্তাকাটা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম আমার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড মুসলিম গোরস্থান রোড পৌরসভার পানির ট্যাংকির উত্তর পাশে নিজ রেকর্ডের জমি দখলের পায়তারা শুরু করেছেন। ওই জমিতে আমার বসতবাড়ি রয়েছে। কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম ওই জমি বাবদ আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে কাউন্সিলর আমার বসতবাড়ির জমিতে নাচনপাড়া এলাকার মো. আবদুস সোবাহান ও মাইঠাচালা ভাঙা এলাকার মোসা. লিপিকে জোড় করে ঘর উঠিয়ে দেন। এতে আমার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তারা আমাদের বিভিন্ন হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখান। এমনকি বেশি বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তিনি আরও বলেন, হুমকি ও চাঁদা দাবির ঘটনায় আমি বরগুনা পুলিশ সুপার ও গোয়েন্দা পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ দায়ের করায় মো. জাহিদুল ইসলাম আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি অব্যাহত রাখেন। তার ভয়ে আমি এলাকায় যেতে পারছি না।
রিকশাচালক বলেন, আমতলী পৌরসভার খোন্তাকাটা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এলাকায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তবে ক্ষমতা আর ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছে না। আমি প্রতিবাদ করায় এখন আমাকে এলাকা ছেড়ে অনত্র থাকতে হচ্ছে।
নুরুল ইসলামের অভিযোগ, কাউন্সিলর মো. জাহিদুল ইসলাম জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে অন্য একজনের সার্টিফিকেট নিজের নামে করে স্থানীয় বেগম নুরজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে সহকারী জজ আদালতে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। এছাড়া মোকাম আমতলী সহকারী জজ আদালতে আমি বিদ্যালয়ের অবিভাবক হিসেবে নিজে বাদী হয়ে জাল সার্টিফিকেট দিয়ে সভাপতি পদ হাতিয়ে নেওয়ায় কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি।
তিনি বলেন, কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলামের বাবার নাম ইসমাইল তালুকদার (মৃত)। কিন্তু তার প্রত্যয়নপত্রে দেখা যায়, তার বাবার নাম মো. মোক্তার আলী লেখা রয়েছে। এ বিষয়ে আমি আমতলী পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমানের বরাবরে অভিযোগ করেছি। তিনিও তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসন ও পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন রিকশাচালক নুরুল ইসলাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ও একটা রিকশা চালক হয়ে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করার টাকা কোথায় পেল? ওর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া তো দূরের কথা, ওর তো চালানই নেই। আপনারা এলাকায় আসেন, খোঁজ নেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
এমএস/জেএইচটি