ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আমাদের প্রাণের চেয়ে ভিসির চেয়ারের মূল্য বেশি!

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
আমাদের প্রাণের চেয়ে ভিসির চেয়ারের মূল্য বেশি! আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন | ছবি: মাহমুদ হোসেন

শাবিপ্রবি (সিলেট): “শিক্ষার্থীদের প্রাণের চেয়ে ভিসির একটি পদের দাম অনেক বেশি! আমরা গণঅনশনের ডাক দিয়েছি, এখন থেকে সেদিকেই যাবো, আমরা মারা গিয়ে প্রমাণ করবো—ভিসির চেয়ারটার দাম আমাদের প্রাণের চেয়ে বেশি ছিল!”

এমন বক্তব্য দিয়ে একযোগে সব শিক্ষার্থী মিলে গণ-অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল বাসার রাজ।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করলে আমরা সবাই মিলে গণ-অনশনে যোগ দেবো।

রাজ বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী যে বক্তব্যে দিয়েছেন, তা অযৌক্তিক। এখনো পর্যন্ত চিকিৎসা চলাকালে অনশনকারীরা হাসপাতালে কোনো খাবার গ্রহণ করেননি।

আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রাণের চেয়ে ভিসির একটি পদের দাম অনেক বেশি! আমরা গণঅনশনের ডাক দিয়েছি, এখন থেকে সেদিকেই যাবো, আমরা মারা গিয়ে প্রমাণ করবো—ভিসির চেয়ারটার দাম আমাদের প্রাণের চেয়ে বেশি ছিল!

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকের সামনে মানব দেওয়াল তৈরি করে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে আছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। রোববার সন্ধ্যায় বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎসংযোগ। বর্তমানে উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলটির কয়েকশ’ ছাত্রী। এরপর ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়।

পর দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান।

এরপর ১৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। পরে অনশন যোগ দিয়েছেন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।