খুলনা: খুলনার আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী শহীদ স্মৃতি চত্বরে এ সংবাদ সম্মেলন করেছে মশিয়ালী সন্ত্রাস নির্মুল কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতদের পরিবারের পক্ষে হাফেজ মো. মাসুম বিল্লাহ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনার মশিয়ালী গ্রামে ২০২০ সালের ১৬ জুলাই ঘটে যায় এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। এ গ্রামের সহজ-সরল মুজিবর নামে এক ব্যক্তিকে পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র দিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেন মশিয়ালী গ্রামের মৃত হোসেন আলী শেখের ছেলে শেখ জাফরিন হাসান, জাকারিয়া ও মিল্টন। এ খবর পেয়ে গ্রামবাসী কেন নিরীহ মুজিবরকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হলো জানতে জাফরিনের বাড়ির কাছে পৌঁছালে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জাফরিন, জাকারিয়া ও মিল্টনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন দুর্বৃত্ত রাত সাড়ে ৮টায় এলাকাবাসীর ওপর গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আলিম জুট মিলের শ্রমিক নজরুল ইসলাম (৬০) ও রাজমিস্ত্রির সহযোগী গোলাম রসুল (৩০)। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই গ্রামের কলেজছাত্র সাইফুল ইসলাম। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন আফসার শেখ (৬৫), শামিম (২৭), রবি শেখ (৪০), খলিল (৩০) রানা (২২) ও সুজন শেখসহ (২৫) বেশ কয়েকজন। নিহত কলেজছাত্র সাইফুলের বাবা সাইদুল শেখ বাদী হয়ে জাফরিন, জাকারিয়া ও মিল্টনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৫ থেকে ১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে আসামি জাফরিনকে যশোরের বাঘাড়পাড়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এর কিছুদিন পর রাজধানী ঢাকার মিরপুর থেকে অপর দুই আসামি জাকারিয়া ও মিল্টনকে গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়াতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে এলাকাবাসী। নিহতদের স্বজন ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষের দাবি ছিল খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার। এখনো নিহতের স্বজনদের বোবা কান্না, সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহতরা এখনো যন্ত্রণায় হাসপাতাল ও বাড়িতে ছটফট করছেন, ঠিক তখনি জাফরিন, জাকারিয়া ও মিল্টন আদালত থেকে জামিনে বের হওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছেন। এরা পুনরায় এলাকায় এসে মামলার বাদীসহ নিরীহ এলাকাবাসীদের পুনরায় হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আমরা বরাবরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা মনে করি এরকম খুনি বাহিরে থাকলে পুনরায় আবারও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারেন। যে কারণে দ্রুত তাদের জামিন বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনার আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ মনিরুল ইসলাম, মশিয়ালী সন্ত্রাস নির্মুল কমিটির আহ্বায়ক ইউপি সদস্য বক্তিয়ার পারভেজ, সদস্য সচিব আব্দুস সালাম গাজী, মুনতাজ গাজী, সংরক্ষিত ইউপি নারী সদস্য রাজিয়া বেগম, হামিদ গাজী, তবিবুর রহমান মকবুল শেখ, বাবুল শেখ, শহিদ পরিবারের ওলিয়ার রহমান শেখ, মুজিবর রহমান, শহিদুল ইসলাম, রেজাউল শেখ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২২
এমআরএম/আরআইএস