ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সংঘাতের আশঙ্কা

সিলেটে সীমান্তের জিরোলাইন থেকে পাথর উত্তোলন! 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২২
সিলেটে সীমান্তের জিরোলাইন থেকে পাথর উত্তোলন!  পাথর উত্তোলন করছেন শ্রমিকরা।

সিলেট: সিলেটের জৈন্তাপুরে বন্ধ পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন করছে প্রভাবশালী চক্র। সীমান্তের জিরোলাইন এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে যেকোনো মুহুর্তে প্রাণ হারাতে পারেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা জানান, তাদের বাধার মুখে পড়তে হয় না।  তাই তারা পেটের দায়ে অন্যের হয়ে পাথর তুলতে কাজে আসেন। উত্তোলিত পাথর নদী তীরে নিয়ে নৌকাযোগে নিয়ে যাওয়া হয়।  

সরেজমিন দেখা গেছে, কয়েকশ শ্রমিক দিনে ১২৮০ নম্বর আর্ন্তজাতিক পিলার এলাকা থেকে বড় বড় গর্ত খনন করে পাথর উত্তোলন করে রাংপানি (শ্রীপুর) নদীর তীরে জড়ো করছেন। সন্ধ্যা নামার পর পরই উত্তোলিত পাথর নৌকাযোগে নিয়ে যাওয়া হয় আসামপাড়া, চার নম্বর বাংলাবাজার, আদর্শগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় । সেখান থেকে বিক্রি করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকরা বলেন, ‘মহাজনরা পাথর উত্তোলনে করে নদীর পাশে জড়ো করতে বলেছেন। আমরা নৌকা প্রতি ৮০০ টাকা মজুরি পাই। পেটের দায়ে শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন করি। ’

সীমান্ত বাহিনী বিজিবি বাধা দেয় কিনা এমন প্রশ্নে শ্রমিকরা বলেন, ‘মহাজনের সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) লাইন রয়েছে। সেজন্য আমাদের কিছু বলে না। ’

সীমান্তের জিরোলাইনে পাথর উত্তোলন করতে বিএসএফের সদস্যরা সমস্যা করে কিনা জানতে চাইলে শ্রমিকরা বলেন, ‘বিএসএফের সদস্যরা দেখলে আমরা পালিয়ে যাই। ’

স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে বন্ধ থাকা শ্রীপুর পাথর কোয়ারি থেকে প্রভাবশালী একটি পাথরখেকো চক্র সীমান্তের ১২৮০ পিলার এলাকা থেকে শ্রমিক দিয়ে পাথর উত্তোলন করে আসছে’

তারা জানান, ‘সীমান্তে পাথর উত্তোলনের জন্য বিএসএফ বাধা দেয়। তারপরও পাথর উত্তোলন হচ্ছে। পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহুর্তে বিএসএফের সদস্যরা গুলি করতে পারে। ’

স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসমাইল আলী বলেন, ‘শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে আগে পাথর উত্তোলন করে ব্যবসা করতাম। কোয়ারিতে পাথর উত্তোলনের অযোগ্য হওয়ায় সরকার ইজারা বাতিল করে। তারপর থেকে কোয়ারি বন্ধ রয়েছে’।  সম্প্রতি একটি চক্র সীমান্তে জিরোলাইন অতিক্রম করে পাথর উত্তোলন করছে। জিরোলাইন অতিক্রম করা কোনোভাবে কাম্য নয়।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, ‘শ্রীপুর কোয়ারি সরকারিভাবে বন্ধ রয়েছে। কোয়ারির জিরোলাইন থেকে পাথর উত্তোলন হচ্ছে বিষয়টি আমার জানা নেই। ’

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। শ্রীপুরবন্ধ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি কেউ আমাকে অবগত করেননি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।