ঢাকা, রবিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জুন ২০২৪, ২২ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

রাজনৈতিক-প্রশাসনের প্রোগ্রামে নাজেহাল নওগাঁর খেলার মাঠগুলো 

তৌহিদ ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
রাজনৈতিক-প্রশাসনের প্রোগ্রামে নাজেহাল নওগাঁর খেলার মাঠগুলো 

নওগাঁ: নওগাঁ শহরের খেলার মাঠগুলোতে দিন দিন হারাচ্ছে খেলার পরিবেশ। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক সভা কিংবা প্রশাসনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান লেগেই থাকে মাঠগুলোতে।

এতে মাঠ খনন আর বর্জ্য ফেলে ধ্বংস করা হয়েছে মাঠের পরিবেশ।  

গত ১৭ মার্চ ৭ দিনব্যাপী শহরের প্রাণকেন্দ্রে ‘এ-টিম’ নামে হয়েছে উন্নয়ন মেলা। মেলার স্টলগুলোর জন্য মাঠজুড়ে বসানো হয় বাঁশের খুঁটি। মেলা শেষে তুলে নেওয়া হয়েছে বাঁশের খুঁটি তবে বড় বড় গর্ত রয়েছে এখনো। বিভিন্ন রকম আবর্জনা আর ইট-বালু রয়ে গেছে এখনও। পলেথিন আর খাবারের প্যাকেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে আসে পুরো মাঠ জুড়ে। ফলে নষ্ট হয়েছে খেলাধুলার পরিবেশ।  

শুধু এই মাঠই নয়, শহরজুড়ে তিনটি মাঠই এখন প্রশাসন আর রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে জিম্মি। যার যখন ইচ্ছেমত করে অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ফলে নষ্ট হয়ে গেছে মাঠগুলোতে খেলার পরিবেশে। জেলার একমাত্র স্টেডিয়ামে রয়েছে অনুষ্ঠানের খপ্পরে। অনুষ্ঠানের পাশাপাশি স্টেডিয়ামে করা হয় রান্নার কাজ। কিন্তু সেগুলো সময় মতো পরিষ্কার করা হয়না।  

এটিম মাঠ এলাকার সবুজ হোসেন, নিলয়, ফাহাদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে জানান, আগের মতো এই মাঠে আর খেলা যায়না। পুরো মাঠে জুড়ে বড় বড় গর্ত আর ময়লায় ভরে গেছে। বছরের বেশিরভাগ সময় এই মাঠে অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার হয়। ফলে আমরা আর এই মাঠে ঠিকমতো খেলতে পারিনা।  

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, এটি শহরের একমাত্র উন্মুক্ত খেলার মাঠে। মাঠটি উন্মুক্ত হওয়ায় যে যার ইচ্ছে মতো গরু ছাগল নিয়ে বেধে রাখে পুরো মাঠে জুড়ে। প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের সঙ্গে ঝগড়া বাধে।  

শহরের মাস্টার পাড়া মহল্লার মাজেদ মোল্লা বাংলানিউজকে জানান, এসব মাঠের এই অবস্থায় বাচ্চাদের পাঠানোর দায়। অনেক সময় বাচ্চার খেলা করতে গিয়ে আঘাত পায়। ফলে বাচ্চার এখন বাসায় খেলাধুলা করে। এখানে শুধু খেলাধুলা বন্ধ নয়, বাচ্চাদের মানসিক এবং শারিরীক বিকাশের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই আমরা।  

এসব নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, সুন্দর পরিবেশ ছাড়া ভাল মানের খেলোয়াড় তৈরি করা অসম্ভব। দীর্ঘদিন জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি নেই। ফলে এসব অব্যবস্থাপনা দেখার কেউ নেই। একসময় এই জেলা থেকে অনেক নামি-দামি খেলোয়াড় তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।  কিন্তু এখন আর সেই জৌলুস নেই। এটির একমাত্র কারণ হল মাঠগুলোর এমন বেহাল অবস্থা। অতিসত্বর প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিয়ে মাঠগুলোতে খেলার পরিবেশ ফেরাতে হবে।  

বিষয়টি নিয়ে আশানুরূপ বক্তব্য দিতে পারিনি জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। মাঠগুলোর এমন খারাপ অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। কথা বলেলনি মাঠের জন্য বরাদ্দের টাকা নিয়েও। তবে জেলা প্রশাসন জানান, মাঠগুলোতে খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে প্রশাসন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।