ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিনোদনপ্রেমীদের নজর কেড়েছে ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২২
বিনোদনপ্রেমীদের নজর কেড়েছে ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই মোরগ লড়াই চলছে। ছবি: বাংলানিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী খেলা মোরগ লড়াই। জেলা শহরের ফারকী পার্কে অংশ নেয় জেলা সদরের তিনটি টিমের ছয় জোড়া মোরগ।

 

লড়াই উপভোগ করতে বিভিন্ন বয়সী মানুষ জড়ো হয়। দীর্ঘদিন পর গ্রামীণ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ মোরগ লড়াই উপভোগ করতে পেরে দর্শকরাও উচ্ছ্বসিত। জেলায় বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী এই খেলার আয়োজন করা হয়।  

আয়োজকরা জানান, শত বছর আগে এ জেলায় মোরগ লড়াইয়ের প্রথম প্রচলন হয়। কথিত আছে সরাইল উপজেলার একজন জমিদার ভারত থেকে দুটি হাতির বিনিময়ে দুটি হাঁসলি মোরাগ নিয়ে আসেন। বংশ পরম্পরায় হাঁসলি মোরগের লড়াই এভাবে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। কালের বিবর্তনে কিছুটা ভাটা পড়লেও উদ্যোক্তারা নিজ উদ্যোগেই এ ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত আছেন।  বর্তমানে জেলায় ৮টি ক্লাবের উদ্যোগে ৫ শতাধিক মোরগ রয়েছে। প্রতি বছর কুমিল্লা, নরসিংদী, সিলেট, কিশোরড়ঞ্জ, চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্রীড়াপ্রেমীদের সঙ্গে এখানকার ক্লাবের নিয়মিত প্রতিযোগিতা হয়। এর মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সম্প্রীতির সেতুবন্ধন গড়ে উঠে।  

মোরগ নিয়ে লড়াই করতে আসা মো. রেহান উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি হাঁসলি মোরগ দুই ঘণ্টা লড়াই করতে সক্ষম। লড়াই করতে করতে নির্দিষ্ট ছকের বাইরে চলে গেলে মোরগের মালিক তাকে এক মিনিট পরিচর্যা শেষে আবারও লড়াইয়ের মাঠে নিয়ে আসেন। প্রতিপক্ষকে পরাজিত না করা পর্যন্ত মাঠে লড়াই চলতে থাকে।  

মোরগ পালনকারী মজনু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি মোরগ দাম ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। হাঁসলি মোরগ পালন অত্যন্ত ব্যয় বহুল হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র শখের বসে আমরা এসব পালন করছি। জেলা হাঁসলি মোরাগ উন্নয়ন সংস্থার সম্বনয়কারী মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন জেলার সঙ্গে সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে উঠে। পাশাপাশি আমাদের বিনোদনের চাহিদাও মিটছে।

মোরগ লড়াই উপভোগ করতে আসা কয়েকজন বিনোদনপ্রেমী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাঁসলি মোরগের নাম দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে। সচরাচর এ ধরনের খেলা এখন আর চোখে পড়ে না। দীর্ঘদিন পর খেলা দেখে বেশ আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছি।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়ামিন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মোরগ লড়াইসহ হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন ঐতিহ্যকে আমরা ফিরিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এতে আবহমান বাংলার সংঙ্কৃতি কর্মকাণ্ডে আবার গতি পাবে বলে মনে করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।