ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ছুরি-ব্লেড দিয়ে নিজেই অপারেশন করতেন মিল্টন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২৪
ছুরি-ব্লেড দিয়ে নিজেই অপারেশন করতেন মিল্টন

ঢাকা: প্রতারণা ও নানা অনিয়মের অভিযোগে গ্রেপ্তার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার প্রয়োজনে নিজেই অপারেশন করতেন। অভিযোগ রয়েছে ছুরি-ব্লেড চালিয়ে কয়েকজনের হাত-পা ও আঙ্গুল কেটেছেন মিল্টন।

রিমান্ডে ডিবি হেফাজতে মিল্টনকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন ভয়ংকর ও লোমহর্ষক তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মিল্টন কখনোই অসুস্থদের কোনো হাসপাতালে নিতেন না। তিনি নিজেই অপারেশন করতেন। বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে যাদের শরীরের কোন অংশ পঁচে যেত সে অংশগুলো তিনি ছুরি ও ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলতেন। এমন বেশ কয়েকজন বৃদ্ধের তিনি হাত, পা ও আঙ্গুল কেটেছেন। মিল্টনের অপারেশন থিয়েটারে শুধুমাত্র কয়েকটা ছুরি ও ব্লেড পাওয়া গেছে।  

এদিকে, মিল্টনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বর্তমানে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা থাকার তথ্য পেয়েছে ডিবি। তিনি মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আশ্রমের মানুষদের কবর ও বৃদ্ধ, বাকপ্রতিবন্ধী, অসহায় মানুষদের আশ্রয়ের কথা বলে টাকা সংগ্রহ করতেন। কবর দেওয়ার সংখ্যা যতো বেশি টাকা সংগ্রহ ততো বেশি হতো।

তার আশ্রমে ৯০০ জন মানুষ মারা গেছে যে তথ্য মিল্টন প্রচার করেছেন সেটিও ভুয়া। জিজ্ঞাসাবাদ মিল্টন জানায়, এসব মিথ্যা কথা বলে মানুষের সহানুভূতি নিয়ে টাকা সংগ্রহ করত মিল্টন। প্রকৃতপক্ষে তার আশ্রমে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ১০০ এর মতো, যাদেরকে তিনি কবর দিয়েছেন। কিন্তু এদের তথ্যও রেজিস্টারে উল্লেখ নেই। সেই ১০০ কবরের তথ্য জানতে চাইলেও সেটা ডিবি কাছে সঠিকভাবে প্রমাণ করতে পারেননি মিল্টন।

এ বিষয়ে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার একজন মাদকাসক্ত ও সাইকোপ্যাথ মানুষ। মিল্টন টর্চার সেলে মানুষজনদের পিটিয়ে নিস্তেজ করতেন। তিনি কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মিল্টনের বিরুদ্ধে আরও সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করব।

গত বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে কয়েকদিন ধরে মানবতার ফেরিওয়ালার মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর সব প্রতারণার অভিযোগ উঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচিত মুখ মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। এমনকি অসহায় মানুষের নামে সংগ্রহ করা অর্থ আত্মসাৎ এবং তাদের কিডনিসহ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরির মতো গা শিউরে ওঠা অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।

এছাড়া জাল ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি এবং জমি দখলের মতো গুরুতর সব অভিযোগ রযেছে তার বিরুদ্ধে। অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবার কথা বলে গড়ে তোলা ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম ঘিরে তার অপকর্মের চিত্র উঠে আসে গণমাধ্যমে। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২৪
পিএম/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।