ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
বাবার কোলে শিশুকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ৩

নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাত হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামের মৃত নুরনবীর ছেলে এমাম হোসেন ওরফে স্বপন (৩০) উপজেলার লফিতপুর চৌধুরী মাস্টার বাড়ির সামছুদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন বাবার (২৩) লফিতপুর গ্রামের ছাদেক মেম্বারের পুরান বাড়ির দেলেয়োর হোসেনের ছেলে দাউদ হোসেন রবিন (১৭)।

এদিকে শিশুর মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের সরুরপোল এলাকায় নিহত তাসফিয়ার মরদেহ নিয়ে অবস্থান নেয় স্থানীয় এলাকাবাসী।

এসময় তারা তাসফিয়ার হত্যাকারীদের ছবিযুক্ত ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। পরে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করলে ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার মামা (খালার স্বামী) হুমায়ন কবির বাদী হয়ে বাদশা, রিমন সহ ১৭জনের নাম উল্লেখ্য ও অজ্ঞাত নামা আরও ১০-১২জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি।

প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মালেকার বাপের দোকান এলাকার বন্ধু স্টোরে যান আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে তুই (আবু জাহের) ওইদিন বৈঠকে ছিলি বলে গালাগালি করে। একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তারা দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পিছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া।

পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পিছন থেকে আরও দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নানীর কোলে মারা যায় তাসফিয়া।

মাটি কাটার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের সাথে কোন ভাবেই সংপৃক্ততা ছিল না মাওলনা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়ার। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিল এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হয় মাওলানা আবু জাহের, আর সেই টার্গেটের স্বীকার হয়ে প্রাণ হারায় তাসফিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২২
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।