ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত রাশাদ হোসাইন বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করছেন। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ওই পদে প্রথম কোনো মুসলিম হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিককে মনোনয়ন দেন।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ৮৫-৫ ভোটে ওই পদের জন্য রাশাদকে মনোনয়নের প্রস্তাব অনুমোদন করে।
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনেও তিনি (ওআইসিতে ওবামার বিশেষ দূতসহ) গুরুত্বপূর্ণ অনেক দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাশাদ হোসাইন বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
জর্জ টাউন ল’ সেন্টার, জর্জটাউন স্কুল অব ফরেন সার্ভিসে তিনি এডজাঙ্কট প্রফেসর হিসেবে শিক্ষাদান করেছেন। তিনি উর্দু, আরবি এবং স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলতে পারেন।
বাইডেনের এই বিশেষ রাষ্ট্রদূত রাশাদ হোসাইন একজন কোরআনে হাফেজ। বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস-এর ২০১০ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওবামা আগের বছর (২০০৯) জুনে মিশরের কায়রোতে দেওয়া এক ভাষণে জানান যে, রাশাদ কোরআনে হাফেজ।
রাশাদকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়াতে বিরোধী পক্ষের তোপের মুখেও পড়তে হয়েছিল ওবামাকে। কিন্তু ওবামা বরাবরই রাশাদকে তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়ে গেছেন।
বাংলাদেশে সফরকালে রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে রাশাদ হোসাইন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ঢাকার পল্টনে পরিষদের কার্যালয়ে তিনি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিশেষ দূত হোসাইন বাংলাদেশের বিদ্যমান ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান।
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জানান, ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদী তৎপরতা বাংলাদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে অস্তিত্ব সংকটে নিক্ষেপ করেছে। ভবিষ্যতের নির্বাচনী পরিস্থিতি তাদের শঙ্কাগ্রস্ত করে তুলছে।
বৈঠকে রাশাদ হোসাইন বলেন, "আমি ও আমার পরিবার ভারতের বিহার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছি এবং নাগরিকত্ব পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টিকে সকল নাগরিকের জন্য সমান রেখেছে। ধর্ম চর্চায় সবার সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করেছে। বিধায় আমি আজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক মনোনীত হয়ে এ জায়গায় আসতে পেরেছি। ... সমাজের মনোজাগতিক বিষয়ের পরিবর্তন কেবল সরকারের একার নয়। ধর্মীয় সম্প্রদায়, জাতি-গোষ্ঠী এবং সুশীল সমাজকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। "
তিনি সারা বিশ্বে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "দেশে দেশে সংঘঠিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র অবহিত এবং যথাসম্ভব পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। "
চীনে মুসলমান নিগ্রহ ও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচারের বিষয়গুলোও উল্লেখ করেন বাইডেনের এই বিশেষ দূত।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
এমজেএফ