ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিপ্লবী নেতা লেনিনের ১৫২তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২২
বিপ্লবী নেতা লেনিনের ১৫২তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার

ঢাকা: বিশ্বের প্রথম স্বার্থক মহান বিপ্লবী, শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির মহানায়ক ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ লেনিনের ১৫২তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার। তিনি ১৮৭০ সালে ২২শে এপ্রিল জার শাসিত রাশিয়া'র ভল্গা নদীর তীরবর্তী সিমবির্স্ক নামক ছোট শহরে জন্ম গ্রহণ করেন।

পাঁচ বছর বয়সেই ভ্লাদিমির পড়তে শেখেন, নয় বছর বয়সে ভর্তি হয় সিমবির্স্ক জিমনেসিয়মের প্রথম শ্রেণিতে। পড়াশোনায় ভ্লাদিমির ছিলেন খুবই মনোযোগী। কিশোর লেনিনের চরিত্র ও দৃষ্টিভঙ্গী গড়ে ওঠে রুশ সাহিত্য ও পরিবেশের জীবন পর্যবেক্ষণের প্রভাবে।

১৮৮৭ সালে লেনিনের দাদা আলেক্সান্দর উইলিয়ানভ জার তৃতীয় আলেক্সজ্নডরকে হত্যা করার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। এ ঘটনায় তিনি অনেক বেশি আলোড়িত হন। দাদার মৃত্যুর পর ভ্লাদিমির বিপ্লবী সংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন।

লেনিন কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। প্রগতিশীল ধ্যান ধারণার ছাত্র-যুবদের নিয়ে তিনি ১৮৮৭ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। এ অপরাধে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।

১৮৯২ সালে লেনিন সামারায় প্রথম মার্কসবাদী দল গঠন করেন। ১৮৯৩ সালের আগস্ট মাসে লেনিন সামারা থেকে পিটার্সবার্গে চলে আসেন। পিটার্সবুর্গ ছিল সে সময় রাশিয়ার রাজধানী। মার্কসদের গভীর জ্ঞান এবং রুশীয় পরিস্থিতিতে তা প্রয়োগের দক্ষতা, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে অবিচল থাকায় পিটার্সবুর্গে মার্কসবাদী স্বীকৃত নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

রাশিয়ান স্যোশাল ডেমোক্র্যাটিক লেবার পার্টি গঠনের সময় ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ লেনিন ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। সাইবেরিয়ার লেনা নদীর নামানুসারে তিনি নিজের নাম রাখেন লেনিন।

পিটার্সবার্গে মার্কসবাদীরা প্রচার কাজ চালাত ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে। ১৮৯৫ সালে মার্কসবাদীদের সিদ্ধান্তে লেনিন ইউরোপীয় শ্রমিক আন্দোলন গ্রুপ ‘শ্রমমুক্তি’ এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তিনি সুইজারল্যান্ড, জার্মানি ও ফান্স ভ্রমণ করেন।

পরে শ্রমিকদের নিয়ে ‘সংগ্রাম সংঘ’প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৮৯৬ সালে ‘সংগ্রাম সংঘ’এর নেতৃত্বে পিটার্সবার্গে সুতাকল শ্রমিকদের একটি ধর্মঘট সংঘটিত হয়। এতে ৩০ হাজারেরও বেশি নরনারী শ্রমিক অংশ নেন। ফলে সরকার ডিসেম্বরের গোড়ায় লেনিনসহ দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। পরে জেলে থেকেই তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান।

জার সরকার ১৮৯৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লেনিনকে ৩ বছরের জন্য সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত করে। লেনিন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘রাশিয়ায় পুজিঁবাদের বিকাশ’ শীর্ষক বইটি এই নির্বাসিত জীবনেই লিখে শেষ করেন। ১৮৯৯ সালে তা প্রকাশিত হয়। বইটি মূলত কার্ল মার্কসের ‘পুজিঁ’ বইটির সরাসরি পূর্বানুসরণ। ১৯০০ সালের ২৯ জানুয়ারি নির্বাসনের মেয়াদ শেষ হয়।

সমাজতান্ত্রিক জাগরণের মাধ্যমে রুশ বিপ্লবের নায়ক কমরেড ভি আই লেনিনের বলশেভিক বিপ্লব আলোড়িত করেছিল গোটা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষকে। তার আদর্শে মার্কসবাদকে বুকে ধারণ করে লাল পতাকাতলে একীভূত হয়ে সমাজ পরিবর্তনের শপথ নিয়েছিলেন লাখ লাখ মানুষ।

১৯২৩ সালের মার্চ মাসের শেষ দিকে লেনিনের শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯২৪ সালের ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান লেনিন।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২,২০২২
আরকেআর/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।