ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

স্কুলের রাস্তায় ঝূঁকিপূর্ণ সাঁকো

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
স্কুলের রাস্তায় ঝূঁকিপূর্ণ সাঁকো ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে শিশুরা

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মধুপুর গ্রাম। গায়ের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মধুপুর-ঝবঝবিয়া সংযোগ সড়ক।

 

আর এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী। গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটির একটি অংশ ভেঙে যাওয়ায় সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এ সাঁকোটিও হয়ে পড়েছে নড়বড়ে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসীদের।  

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের মধুপুর-ঝবঝবিয়া সংযোগ সড়কের গোড়ায় বাঁশের সাঁকোটির অবস্থান। মধুপুর সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচলের অন্যতম রাস্তা এটি। এছাড়া উল্লাপাড়া আকবর আলী সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয় এ সাঁকো পার হয়েই। আর গ্রামের কৃষক-শ্রমিকদের হাট-বাজারে যাবার রাস্তাও এটি। এমন একটি সাঁকো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কোন পাকা সেতু নির্মাণও করা হচ্ছে না। ফলে দূর্ভোগের মধ্য দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে মধুপুর গ্রামবাসীকে।  

সাব্বির, জুঁই, সোহাগ, নাফিজ ও খাদিজাসহ সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পা টিপে টিপে পার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করে। সাঁকোর বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁশ ভেঙে গেছে। এ কারণে মাঝে মধ্যেই সাঁকো থেকে পা পিছলে পড়ে আহত হয় তারা।

আব্দুল মতিন, শরিফুল আলম, জাহাঙ্গীর, আলম হোসেনসহ মধুপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, গ্রাম থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার জন্য ঝবঝবিয়া সংযোগ রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী এ রাস্তাতেই যাতায়াত করে। উল্লাপাড়ায় অবস্থিত স্কুল ও কলেজের অনেক শিক্ষার্থীর চলাচলের রাস্তা এটি। বেশ কয়েক বছর আগে বন্যায় রাস্তাটির গোড়ার দিকে ভেঙে যায়। পাঁচ-সাত বছর পার হলেও ভাঙা অংশ সংস্কার করা হয়নি। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানালেও কোনো কাজ হয়নি। গ্রামবাসী বাধ্য হয়ে নিজেদের বাড়ি থেকে বাঁশ আর দড়ি সংগ্রহ করে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন মেরামত না করায় সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। সাঁকো ভেঙে অনেক দিন পড়ে গিয়ে গ্রামের লোকজন এবং ছাত্রছাত্রীরা আহত হয়েছেন। বর্ষার সময় পড়ে গিয়ে ভিজতে হয় অনেককে। ভেজা স্কুল ইউনিফর্মেই তখন তাদের ক্লাস করতে হয়।  

এ ব্যাপারে মধুপুর সবুরা ছামাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এলিনা পারভীন বলেন, ওই সেতুটি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। রাস্তাটির ভাঙ্গা অংশে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা জরুরি।  

পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম তপন জানান, মধুপুর-ঝবঝবিয়া সংযোগ সড়কটির ভাঙা অংশ দিয়ে গ্রামের লোকজন বর্ষা মৌসুমে নৌকা নিয়ে বাইরে যাতায়াত করেন। এ কারণে সেই স্থানটি সংস্কার করতে অনেকের আপত্তি রয়েছে। তবে বর্ষাকালে নৌ চলাচলের উপযোগী রাখতে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকল্প প্রণয়নের আশ্বাস দেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।