ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রেমিকা নিয়ে বিরোধ, অটোরিকশা চালক হত্যায় জড়িত তারই দুই বন্ধু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
প্রেমিকা নিয়ে বিরোধ, অটোরিকশা চালক হত্যায় জড়িত তারই দুই বন্ধু

নারায়ণগঞ্জ: ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় অটোরিকশা (ইজিবাইক) চালককে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।  

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাজমুল আলম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ জামান, পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হাওলাদার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অটোরিকশা চালক আপন কিলিং মিশনে ছিল তারই দুই বন্ধু। আপনকে হত্যার পরে ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি কুমিল্লার হোমনা এলাকায় বিক্রি করে দেয় দুই বন্ধু। এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে ও ছিনতাই চক্রে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।  

ঘটনার বর্ণনায় পুলিশ জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার তিন বন্ধু নাহিদ, মো. আমির হোসেন ওরফে আমিন এবং মো. আপন। তিনজনই পেশায় অটো চালক। নাহিদ এবং আপন দুই বন্ধু এলাকার স্থানীয় এক মেয়েকে পছন্দ করতো। সম্প্রতি এই বিষয়কে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে তাদের আরেক বন্ধু আমির হোসেন নাহিদকে অপর বন্ধু আপনের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে এবং দুইজন মিলে আপনকে হত্যা জন্য অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এছাড়াও ছিনতাইকৃত অটো বিক্রি করতে চোরাই চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের সঙ্গে চুক্তি করে।  

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন ২৫ এপ্রিল রাত সোয়া ১১ টায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর কাঠপট্টি রেইনবো ডাইং এর পেছনে নাহিদ ও আমির হোসেন নেশাজাতীয় দ্রব্য নিয়ে আপনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। আপন আমির হোসেনের মোবাইল ফোনে ফোন করে তাদের নিকট যায়। তারা একত্রে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করে নাহিদ ও আমির হোসেন আপনকে ঝাপটে ধরে গলা চেপে রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার লাশ ফেলে রেখে আপনের অটোরিকশা ছিনতাই করে পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী বিল্লাল ও ইসমাইল এবং সাইদুলের নিকট ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে।  

এ ঘটনার পরে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিম অপরাধীসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করে এবং মামলার রহস্য উন্মোচন করে। অভিযান পরিচালনা করে এজাহার নামীয় আসামী মাহমুদ হোসেন ওরফে গেদার ছেলে নাহিদ (২২), মো. ফালান মিয়ার ছেলে মো. আমির (২৩)। তারা উভয়ে সৈয়দপুর ফকিরবাড়ী এলাকায় বসবাস করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, অটো বিক্রির ২ নং আসামীর নিকট হতে নগদ ৭ হাজার ৬শ টাকা এবং ১নং আসামীর নিকট হতে নগদ ৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।  

আসামীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা জেলার হোমনা হতে তাদের সহযোগী আব্দুল করিমের ছেলে মো. ইসমাইল খন্দকার (২৩), মো. হেলাল মিয়ার ছেলে মো. বিল্লাল মিয়া, হোমনা থানার শ্রীনগর গ্রামের মৃত মানিক মিয়ার ছেলে মো. সাইদুল (২৩)। ইসমাইল ও বিল্লাল উভয়ে হোমনা থানার রামকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা। তাদের নিকট হতে ছিনতাইকৃত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।

এদিকে দুপুরে নিহত অটোরিকশা চালক আপনের বাবা সাত্তার, মা আনোয়ারা, বোন সাবিনা ও খালা সানজানা সদর মডেল থানায় এসে খুনীদের বিচার দাবিতে জড়ো হয়ে আহাজারি করতে থাকলে আশেপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাজমুল আলম তাদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন, খুনীদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই খুনীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।