ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

‘আ.লীগ কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২২
‘আ.লীগ কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি’

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সব সময় ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছে জানিয়ে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। ’

শনিবার (০৭ মে) গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ যদি আমাদের ভোট না দেয়, দেবে না। আমরা আসবো না ক্ষমতায়। কিন্তু ভোট দেবে। আমাদের তো বার বার চক্রান্ত করেই ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে। কাজেই ভোটের মাধ্যমেই আমরা সব সময় ক্ষমতায় আসছি। আওয়ামী লীগ কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি বা কোনো মিলিটারি ডিকটেটরের পকেট থেকে তৈরি করা সংগঠনও না। এই সংগঠন মাটি মানুষের সংগঠন। কাজেই এই সংগঠন মাটি মানুষের জন্যই কাজ করে। এটা আজকে প্রমাণিত। ’

১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্বপালন করে আসা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে ইলেকশনে যতটুকু উন্নতি হয়েছে, এটা আওয়ামী লীগ সরকার করেছে, আওয়ামী লীগই করেছে, এটা আমাদেরই দাবি ছিল। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং এখন ইভিএম। অর্থাৎ মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দিবে, সাথে সাথে ভোটের রেজাল্ট পাবে। যাতে মানুষের ভোটাধিকার মানুষ দিতে পারবে, আমরা সেটাই চাই। ’

টানা তিনবারের সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের দেশের মানুষকে যারা আমাদের বার বার ভোট দিয়েছে, বিশেষ করে পর পর তিন বার আমরা ক্ষমতায় আসার ফলে আমরা উন্নয়নটা দৃশ্যমান করতে পেরেছি। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে, যার ফল দেশের মানুষ ভোগ করছে। তাদের জীবন যাত্রা পাল্টে যাচ্ছে। তাদের জীবন যাত্রা উন্নত হচ্ছে। এখনো যারা পিছিয়ে পড়ে আছে তাদের আমরা সুন্দর জীবন দেবো। তাছাড়া অনগ্রসর গোষ্ঠী যারা আমরা তাদেরকেও কিন্তু পিছনে ফেলে দেইনি। ’

অতীতের মতো বিদেশিরা বাংলাদেশের ক্ষমতার পট পরিবর্তন করতে পারবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যত বদনাম দেশের বিরুদ্ধে, বিদেশিদের কাছে বলে বেড়ায়। তাদের আকাঙ্ক্ষা বিদেশ থেকে কেউ এসে কোলে করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। অতীতে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। তবে এখনকার বাংলাদেশ সেটা না। এটা আর পারবে না বাংলাদেশে। এইটুকু বলতে পারি। যদি আমাদের সংগঠন এভাবে শক্তিশালী থাকে। মানুষের আস্থা বিশ্বাস আমাদের ওপর আছে, সেটাকে ধরে রেখে যদি আমরা এগিয়ে যেতে পারি। তবে দেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। ’

সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, ‘সংগঠন হচ্ছে একমাত্র, সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। এটা হচ্ছে বড় কথা। সংগঠনে নেতৃত্ব সেখানেই আপনারা বেছে দেবেন, যাদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা থাকবে বিশ্বাস থাকবে। এই কথাটা মনে রাখতে হবে। কারণ আমরা জনগণকে বিশ্বাস করি, জনগণের ওপর আস্থা রাখি। আর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েই কিন্তু বার বার ক্ষমতায় এসেছি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে। বার বার বাংলাদেশে অনেক ধাক্কা গেছে। বোধ হয় এই প্রথম আমরা ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে পেরেছি বলেই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা সম্ভব হয়েছে। এটা হলো বাস্তবতা। এর মধ্যে অনেক বার চেষ্টা হয়েছে, নির্বাচনের আগেও নানা খেলা খেলার চেষ্টা, নির্বাচনের পরেও খেলার চেষ্টা, কিন্তু জনগণের সাড়া যেহেতু পায়নি। আর জনগণ যেহেতু আমাদের সাথে আছে তাই কেউ কিছু করতে পারেনি। কাজেই সেই জনগণকে আমরা সব সময় গুরুত্ব দেই। তাদের কল্যাণ করাটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের জন্য কাজ করে, এটা প্রমাণিত সত্য। এই আওয়ামী লীগ জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। আবার আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল। আজকে জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করা দেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে পেরেছি। আমাদের আরও সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। ’

তিনি বলেন, ‘এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিল জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া। ক্ষমতা তো জনগণের কাছে ছিল না। ক্ষমতা ছিল ক্যান্টনমেন্টে বন্দি। সেখান থেকে তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে মিলিটারি ডিকটেটরশিপ চালিয়েছিল। যেটা আইয়ুব খান করেছিল। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় যেতে চান কিন্তু জনগণের ভোট চাইতে পারেন না। ভোট চাইতে তাদের সেই সামর্থ নাই বা কোনো কিছু নাই কিন্তু আকাঙ্ক্ষা আছে, তারা চাইবে এদেশের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করতে। তারাই চাইবে এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে। কারণ সামরিক জান্তার পকেট থেকে ক্ষমতায় বসে যেসব দল গঠন হয় তারা আর যাই হোক গণতন্ত্র দিতেও পারে না, গণতন্ত্র চর্চাও করতে পারে না। গণতন্ত্র তারা বোঝেও না। ’

তিনি বলেন, ‘তারা মানুষ খুন করতে পারে। আইভী রহমানকে খুন করেছে, আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাদের যে কুকর্মগুলো আবার মানুষের সামনে তুলে ধরা দরকার। মানুষকে আবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২২
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।