যশোর: ‘আমার ভাই ভিডিও করছিল! ভিডিও করতি করতি কী ছুইটে আইসে আমার ভাই’র মাথায় লাইগলো রে...। মা কয়ে চিল্লেন দিয়ে আর কথা কইনি রে...।
নিহত ইব্রাহীম (২৭) ওই এলাকায় একটি কোম্পানিতে শিপিং সহকারী পদে চাকরি করতেন। তিনি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের আবুল কাশেম মুন্সীর ছোট ছেলে।
ইব্রাহীমের খালাতো ভাই শিমুল হোসেন বলেন, শনিবার রাতে অনেকের মতো ইব্রাহীম অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ফেসবুকে লাইভ করছিলেন। কিছু সময় পর হঠাৎ ডিপোর কনটেইনারগুলোতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তখন থেকে ইব্রাহীমের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখুঁজির পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহের সন্ধান মেলে।
এদিকে, রোববার সকাল থেকেই প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজন ইব্রাহীমের বাড়িতে ভিড় করছেন। ছেলের অপেক্ষায় রয়েছেন মা দুলুপি বেগম ও বাবা আবুল কাশেম। জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে স্ত্রী মুন্নি খাতুন যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। ভাই-বোনসহ অন্যান্য স্বজনদের গগনবিদারী আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে।
ইব্রাহীমের মা বলেন, ‘শনিবার রাত ৯টায় ইব্রাহীমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আমাদের শেষ কথা হয়। ঈদে বাড়ি এসে সন্তানের মুখ দেখতে চেয়েছিল সে। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে ইব্রাহীমের সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। ’
জহুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, পাঁচ বছর আগে চাকরি পান ইব্রাহীম। দেড় বছর আগে নিজ গ্রামেই বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী এখন নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
তিনি আরও জানান, রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে মরদেহ গ্রহণ করে ইব্রাহীমের খালাতো ভাই শিমুল যশোরের পথে রওনা হয়েছেন। সোমবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২২
ইউজি/কেএআর