ঢাকা: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ১৫ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে রাসেল (৪২) নামে একজন বুকে ব্যথা পাওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল স্থানান্তর করা হয়।
রোববার (৫ জুন) ও সোমবার (৬ জুন) তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
সোমবার (৬ জুন) বার্ণ ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক এসএম আউব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকায় আসা রোগীদের মধ্যে ৪ জন আইসিইউতে ও বাকি ১০ জন রোগী post-operative চিকিৎসাধীন আছেন।
দগ্ধরা হলেন- সিকিউরিটি ইনচার্জ মাগফারুল ইসলাম (৬৫) প্রশাসনিক কর্মকর্তা খালেদুর রহমান (৬০)। শিল্পাঞ্চল থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম(৩৭), ইমপোর্ট সুপারভাইজর শেখ মইনুল হক চৌধুরী (৪১), লেবার আমিন (২২), কনটেইনার চালক মো. ফারুক (৪৭), রিসিভার ফরমানুল (৩২), ইঞ্জিনিয়ার মাসুম মিয়া(৩২), চালক মহিবুল্লাহ (২৭), লেবার ফারুক হোসেন (১৬), চালক রুবেল মিয়া (৩৪) নজরুল ইসলাম (৩৭) এবং ফায়ার ফাইটার রবিন মিয়া (২২), ও গাউছুল আজম (২২)।
এদের মধ্যে ৮জন রোগীকে চট্টগ্রাম থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এবং বাকি ৭জনকে সেনাবাহিনীর হেলিকপটারযোগে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
আর বাকি ৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে।
মাগফারুলের ভাই আসাদুল হক জানান, সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসেবে চাকরি করেন মাগফারুল। থাকতেন ডিপোর ভিতরের কোয়ার্টারে। রাতে বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়ার পর স্থানীয়রা তাকে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। এরপর সকালে তাকে সেখান থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তার হাত-পাসহ শরীরের বেশ কিছু অংশ দগ্ধ হয়েছে।
কামরুলের খালাতো ভাই নেয়ামত উল্লাহ জিসান জানান, দুর্ঘটনার খবর শুনে ফোর্স নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তখন বিস্ফোরণে তিনিও দগ্ধ হন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে, পরে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
আমিনের সহকর্মী মো. সেলিম রেজা জানান, আমিরের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। কনটেইনার ডিপোতে লেবারের কাজ করে। ঘটনার দিন রাত ১১টায় তাদের ডিউটি করার কথা ছিল। ডিউটিতে যাওয়ার আগে মোবাইলের টাকা লোড করতে যাচ্ছিল আমিন। তখনই বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়।
রাসেলের ভাই মো রবিউল ইসলাম জানান, রাসেল ও ফারুক নারায়ণগঞ্জ প্রাইম কালচার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কনটেইনার গাড়ি চালক। গতকাল মোট ৫টি কনটেইনার গাড়ীতে গার্মেন্টসের মালামাল নিয়ে সীতাকুণ্ডের ওই ডিপোতে গিয়েছিল। আগুন লাগার পর তারা সেখান থেকে আনুমানিক আধা কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছিল। তখন আবার বিস্ফোরণ হলে তারা ছিটকে পড়ে। তখন ডিপোর বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে তাদেরকে বের করা হয়। এ সময় ফারুক দগ্ধ হলেও রাসেল বুকে আঘাত পায়।
ইনস্টিটিউটটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, সোমবার ভোরে আমি ও ইনস্টিটিউটের তিনজন চিকিৎসক এবং প্রধানমন্ত্রীর পিএস বিপ্লব বড়ুয়া চট্টগ্রাম মেডিক্যালে এসেছি। এখানকার চিকিৎসক ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউটটে মোট ১৪ জন ভর্তি আছেন। রাসেল নামে একজন বুকে আঘাত পাওয়ায় তাকে ঢামেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। মাকফারুল ইসলাম ও খালেদুরের শরীরের ১২শতাংশ, কামরুলের ৪ শতাংশ, মইনুলের ১৮ শতাংশ, আমিনের ৫ শতাংশ, ফারুকের ৫ শতাংশ, ফরমানুলের ৩০ শতাংশ, মাসুমের ৪ শতাংশ, রবিনের ৬০ শতাংশ, মহিবুল্লার ১০ শতাংশ, ফারুকের ১২ শতাংশ, গাউছুল আজমের ৭০ শতাংশ ও রুবেলের ১৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ
ডা.সামন্ত বলেন, ভর্তি চারজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। বাকিদেরও আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। তাদের ইনহেলেশন বার্ন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা গত রাত থেকেই চট্টগ্রামের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২২
এজেডএস/এনএইচআর