ঢাকা: চিকিৎসকদের সব সময় মানবতাবোধ নিয়ে মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন সময় মানুষের সেবায় ডাক্তারদের আত্মত্যাগ ও মানবিক কাজের প্রশংসাও করেন তিনি।
সোমবার (০৬ জুন) বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) সুবর্ণজয়ন্তী এবং বিসিপিএসের ১৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা শুধু একটা পেশা হিসেবে না, মানুষের সেবা করা, সেই সেবার ব্রত নিয়েই আপনারা মানুষের পাশে থাকবেন সেটাই আমরা আশা করি। ডাক্তারের কথায় রোগী অর্ধেক ভালো হয়ে যায়। সেটা হলো বাস্তবতা।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা আমি আমাদের চিকিৎসকদের বলবো যখন আপনারা মানুষের সেবা দেন, যখন একজন রোগী ডাক্তারের কাছে যায় চিকিৎসা-ওষুধের থেকেও ডাক্তারের দুটো কথা সেটাও কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মানুষকে সুস্থ করে বা তাদের ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করে। সেই বিষয়টার দিকেও একটু বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।
তিনি বলেন, (মানবতাবোধ) এটাই হলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, এই মানবতাবোধ নিয়েই এদেশের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ক্ষমতাটা আমার কাছে একটা সুযোগ বাংলাদেশের জনগণের সেবা করা। এখানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোগ বিলাসে গা ভাসিয়ে দেওয়া নয়। বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার এবং তাদের সেবা করার একটা সুযোগ হিসেবে আমি মনে করি। কাজেই আপনারাও যে যেখানে যে পেশাতেই থাকেন, মানবতাবোধ নিয়ে মানুষের পাশে থাকবেন এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যান্সার-কিডনি রোগ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইদানিং ক্যান্সার এবং কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব একটু বেশি হচ্ছে। এ সম্পর্কে মানুষ কিভাবে সচেতন থাকতে পারে সে বিষয়ে জানানো দরকার। পাশাপাশি এই চিকিৎসা যেন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারে সেজন্য প্রত্যেক বিভাগেই এ বিষয়ে হাসপাতাল তৈরি করা এবং সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করবো। বিভিন্ন জেলা হাসপাতালগুলোতে কিডনি ডায়ালাইসিস এবং অন্যান্য, হার্টের চিকিৎসা এবং পরীক্ষা যেন হয় সে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। সে কার্যক্রম আমরা করে যাচ্ছি।
রোগ প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারপরও আমি বলবো, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং যথাযথভাবে ডায়াগনোসিস করা, যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেটার ওপর আপনারা একটু গুরুত্ব দেবেন।
চিকিৎসকদের গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গবেষণায় মনোযোগী হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
অনলাইনে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রত্যেক উপজেলা হাসপাতালে ওয়েবক্যাম স্থাপন করেছে। আমরা এটিকে আরও উন্নত করবো। যাতে অনলাইনে উপজেলা থেকে মানুষ বিশেষজ্ঞ সেবা নিতে পারে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) সভাপতি প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি ফেলোদের হাতের পদক তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২২
এমইউএম/এনএইচআর