ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কমিটির ২৩ জনের মৃত্যু, ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলে গৌরীপুর আ. লীগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২২
কমিটির ২৩ জনের মৃত্যু, ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলে গৌরীপুর আ. লীগ

ময়মনসিংহ: রাজা-জমিদারের তীর্থভূমি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা। এর ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ-৩ সংসদীয় আসন।

এক সময় জাতীয় রাজনীতিতে এ উপজেলার সমৃদ্ধ অবস্থান ছিল। কিন্তু এখন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডসহ নানা ইস্যুতে বিপর্যস্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। কমিটি চলে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে!

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৩ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। তারপর আজ পর্যন্ত সম্মেলন হয়নি। শুরুর দিকে ৬৭ জন সদস্য ছিলেন কমিটিতে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ২৩ জন।

কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির ও সাধারণ সম্পাদক বাবু বিধু ভূষণ দাস মারা যাওয়ার পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের বৈঠা ভারপ্রাপ্তদের হাতে।

বর্তমান পৌর কমিটিকে অকার্যকর বলা হচ্ছে। কারণ, এ কমিটির সভাপতি বর্তমান পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আসামি। এ ছাড়া বিগত পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তাকে স্থানীয়ভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। যে কারণেই সাংগঠনিকভাবে এ কমিটিকে অকার্যকর বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

আরও জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কর্মসূচি পালনে ব্যাপক সরব। কিন্তু সাংগঠনিক কাঠামোর অবস্থা বেহাল।

সোমবার (৭ জুন) দুপুরে বাংলানিউজের কাছে এসব তথ্য নিশ্চিত করে গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ম. নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে একবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু, সম্মেলন হয়নি। এখনও সম্মেলন হবে বলা হচ্ছে, কিন্তু কালক্ষেপণ করা হচ্ছে তারিখ নিয়ে। ফলে সাংগঠনিকভাবে দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।  

সামনে নির্বাচন, এ অবস্থায় দলকে শক্তিশালী করতে দ্রুত সম্মেলন করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। নূরুল বলেন, আমরা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম ও জেলার নেতাদের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছে সম্মেলন হবে। তবে আমরা চাই দ্রুত সম্মেলন করে যোগ্য নেতৃত্বে নতুন কমিটি গঠন করা হোক।     

উপজেলা আ. লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ম. নূরুল ইসলামের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন তার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন জুয়েল। তিনি বলেন, দীর্ঘ নেতৃত্বশূন্যতায় স্বাভাবিকভাবেই দলের সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল। তবে সংগঠনে গ্রুপিং বা কোন্দল নেই। দলীয় সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সরব ভাব রয়েছে। যা বর্তমান নেতৃত্বের সফলতা বলে আমি মনে করি।

সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে কমিটি গঠন হলে সংগঠন আরও বেশি শক্তিশালী হবে বলেও তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গৌরীপুর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ দ্রুত ঘোষণা হবে। সে লক্ষ্যে সাংগঠনিক টিমের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান জেলার একাধিক নেতা।

নির্দেশ পেলেই সম্মেলনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হেলাল আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ৬ জুন, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।