ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দেরিতে হলেও ক্রেতামুখর সিলেটের পশুরহাট

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৬ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২২
দেরিতে হলেও ক্রেতামুখর সিলেটের পশুরহাট

সিলেট: গত ক’দিন কোরবানির পশুরহাট ক্রেতাশূন্য থাকলেও শুক্রবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে হাটে বেড়েছে লোক সমাগম।  

বন্যায় বিপর্যন্ত প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে শেষ সময়ে পশুরহাটে বেচাকেনা বেড়েছে।

তবে বিক্রেতারা গরু-ছাগলের দাম হাঁকাচ্ছেন বেশি।

বন্যায় বানভাসিরা সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়লেও ঈদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। যদিও বানভাসিদের অনেকেরই এখনো ঘরে ফেরা হয়নি। আর বন্যায় পশু সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশু। এমন পরিস্থিতিতে সিলেটের কোরবানির পশুরহাট অনেকটা দেরিতে জমেছে।  

সিলেট নগরের প্রধানতম পশুরহাট কাজিরবাজার শুক্রবার থেকে ক্রেতামুখর হয়ে উঠেছে। তবে গত বছরের তুলনায় বাজারে ক্রেতা কম থাকলেও গরুর দাম বেশি।

কাজিরবাজার পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে, এবার বন্যার কারণে বাইরের জেলা থেকে বেপারিরা তেমন গরু নিয়ে আসেননি। আর সীমান্ত ঘেষা সিলেটে ভারত থেকেও গরু নামেনি এবার। ফলে বাজার চলছে দেশি ও খামারিদের গরুর ওপর ভর করে।

বাজার কর্তৃপক্ষ বলছে, গতকাল থেকে আজ ক্রেতাসমাগম বেড়েছে। বাজারে মাঝারি থেকে শুরু করে বড় গরু দেখা গেলেও বিক্রেতারা দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন।  

অপরদিকে সিলেট নগরের ৬টিসহ জেলায় সর্বমোট ৪৬টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। একটা সময় অস্থায়ী বৈধ হাটের পাশাপাশি পুরো শহর অবৈধ হাটে রূপ নিতো। এবার সেই দৃশ্য খুবই কম। বৈধ হাটগুলোতেই গরুর সংখ্যা অতি নগণ্য।  

ফার্মের গরু বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, বাজারে তিনি ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন। ২টি গরু বিক্রি করেছেন। একটি ১ লাখ ২০ হাজার, অন্যটি ১ লাখ ৭০ হাজারে। দাম ভালো পাওয়ায় খুশি এ বিক্রেতা।   

সিলেট শহরের দর্জিপাড়া মল্লিকা এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আব্দুল গাফফার বলেন, তার ফার্মে ২৫টি গরু ছিল। এরইমধ্যে ১২টি বিক্রি করে দিয়েছেন। সর্বনিম্ন ৬০ হাজার থেকে সবার্ধিক একটি গরু ৩ লাখ টাকা বিক্রি করেছি। ৩ লাখ টাকায় বিক্রিত গরু থেকে অন্তত ১২ মণ মাংস পাওয়া যাবে। এবার গরুর দাম চড়া বলেও জানান তিনি।     

নগরের তালতলার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী মো. বদরুজ্জামান জামাল বলেন, বন্যার কারণে এবার ক্রেতা কম। সে হিসেবে কোরবানির পশুর দাম কম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশি ও ফার্মের গরুর বাইরে অন্যান্য অঞ্চল থেকে তেমন গরু আসেনি। আর ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে গরু আসতো সিলেটের বাজারগুলোতে। এবার ভারতের গরু নেই। বড় গরু বলতে ফার্মের। তাই দাম বেশি। একটি ছোট গরু ৫০ হাজার দাম কসলেও কিনতে পারেননি তিনি।    

সিলেটের বিশ্বনাথের রামপাশার বাসিন্দা সোনা মিয়া জানান, তার ভাই প্রতিবছর তিনটি গরু কোরবানি দিতেন। এবার বন্যায় প্রচুর টাকার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এর জন্য এবার একটি গরু কোরবানি দেবেন। গরু কিনতে এসে দেখছেন গরু মালিকরা দাম একটু বেশি হাঁকাচ্ছেন।

সিলেটের সবচেয়ে বন্যাকবলিত কোম্পানীগঞ্জের খাগাইল বাজারের কৃষক আব্দুল বারী বলেন, বন্যার সময় গো খাদ্য ও রাখার জায়গায় না থাকায় দুটি গরু বিক্রি করে দিয়েছিলেন। একটি গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন। দাম যাই হোক গরুটি বিক্রি করে দেবেন।  

বিক্রেতারা দাবি করছে, বন্যার কারণে এবার গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। তাই গো-খাদ্য সংকটের কারণে বাধ্য উপদ্রুত এলাকার অনেকে গরু বিক্রি করছেন।

যদিও নগরের কাজিরবাজারের ম্যানেজার শাহাদত হোসেন লোলন জানান, বাজারে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। তবে দাম একটু বেশি।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানান, কোরবানির হাটের নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২২
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।