ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তাপদাহ: নীলফামারীতে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণে ৬৬ ওয়েম্যান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৪
তাপদাহ: নীলফামারীতে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণে ৬৬ ওয়েম্যান

নীলফামারী: নীলফামারী তীব্র তাপদাহে রেললাইন যাতে বেঁকে না যায়, সেজন্য তদারকি বাড়ানো হয়েছে নীলফামারীতে। নাট, বল্টু, স্লিপার, ক্লিপ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রোদের মধ্যেও কাজ করছেন ওয়েম্যানরা।

এর পাশাপাশি রেললাইন বেঁকে যাওয়া রোধে বালতি, চটের বস্তা, কচুরিপানা সংরক্ষণে রয়েছেন তারা। রেললাইন কোথাও বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হলে সেখানে বালতি দিয়ে পানি সেচ, চটের বস্তা ভিজিয়ে ও কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

সূত্রমতে, নীলফামারীর সৈয়দপুর আউটার থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার রয়েছে ব্রডগেজ রেলপথ। এই রেলপথের রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছেন ৬৬ জন ওয়েম্যান। এর মধ্যে সাতজন নারী ওয়েম্যান রয়েছেন। আটটি দলে ভাগ হয়ে এসব ওয়েম্যান নিয়মিত কাজ করছেন। রেলপথে রেল স্বাভাবিক ও নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য দেখাশোনার দায়িত্ব ওয়েম্যানের।

সৈয়দপুরস্থ রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ জানান, নীলফামারীর মধ্যে রেলপথে ২০১২ সালের দিকে কাঠের বদলে পিআরসি (সিমেন্ট) স্লিপার বসানো হয়েছে। দীর্ঘ ৫৯ কিলোমিটার রেলপথের সম্পূর্ণ পাত (রেললাইন) নতুন। গত বছরের ২২ ডিসেম্বর শীত মৌসুমে একদিনে চার স্থানে রেললাইনে ফেটে যায়। সেসময় প্রকৌশল বিভাগ এটি একটি স্বাভাবিক বিষয় উল্লেখ করে ফাটলগুলো মেরামত শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করেন।  

ওই সূত্রটি জানায়, রেললাইন ফেটে যাওয়া আর অধিক তাপমাত্রায় বেঁকে ভেঙে যাওয়া এক বিষয় নয়।

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের সন্নিকটে দায়িত্বে থাকা ওয়েম্যান রাকিবুল ইসলাম জানান, মূলত তারা রেললাইন পাহারা দেওয়া, রেললাইন তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব, রেললাইন পরিদর্শনের পাশাপাশি রেলপথের ক্লিপ, হুক, ফিশ প্লেট, পাত, নাট, বল্টু ইত্যাদি যাবতীয় জিনিস ঠিক রয়েছে কি না তা যাচাই করেন।  

তিনি বলেন, এক কথায় বলতে পারেন আমরা রেলপথের চেকিংয়ের কাজ করে থাকি। যাতে রেল চলাচলে কোনো বিঘ্ন না ঘটে এবং কোনো দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।

ওয়েম্যান দলের দলনেতা (মেড বা মিস্ত্রি) মমিনুর রহমান বলেন, শীতের সময় রেললাইন সংকোচনের কারণে ফেটে যায়। কিন্তু অধিক তাপমাত্রায় রেললাইন বেঁকে গিয়ে ভেঙে যায়।

সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথে বেঁকে গিয়ে ভেঙে যাওয়ার এখন পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটেনি। আমরা নজরদারি করছি। এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।  

তিনি বলেন, রেললাইনের তাপমাত্রা মাপার জন্য একটি মিটার ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এদিকে রাতের আঁধারে রেললাইনের যন্ত্রাংশ চুরির কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহ-প্রকৌশলী সুলতান মৃধা বলেন, রেললাইনে ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি এড়াতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ মাসে কাজে গাফলতির জন্য দুজন ওয়েম্যান ও একজন মিস্ত্রিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।  

রেললাইনের তাপমাত্রা মাপার মেশিন অকেজোর কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। এছাড়া রাতে রেললাইনের নাট, বল্টু, ফিস প্লেটসহ যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনায় স্থানীয় জনগণ এ মাসে চার চোরকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।