ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

তাঁবুর নিচে ভোট কেন্দ্র!

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
তাঁবুর নিচে ভোট কেন্দ্র!

ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া, মেগচামী ও ডুমাইনসহ তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে।  

বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ।

শেষ হয় বিকেল ৪টায়।   

উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ২৭টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৬টি ভোট কেন্দ্র সুশৃঙ্খলভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হলেও একটি ভোট কেন্দ্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর রাজধারপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে জায়গা সংকুলান থাকায় ভোট কেন্দ্রে তাঁবুর নিচে ভোটগ্রহণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে তাঁবুর নিচে ভোটগ্রহণ করায় ভোটরদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়া এ কেন্দ্রে জায়গা সংকুলান ছাড়াও নেই কোনো শৌচাগার; সঙ্গে নেই কোনো এজেন্টের বসার জায়গা। বিভিন্ন প্রার্থীদের এজেন্টকে বাইরে দাঁড়িয়ে ভোটারদের সহযোগিতা করতে দেখা যায়।  

ভোট দিতে আসা উপস্থিত শতাধিক নারী ভোটাররা আক্ষেপ করে বাংলানিউজকে বলেছেন, এর আগে কোনো দিন তাঁবুর নিচে ভোট দেননি তারা। তাঁবু করে আবার কেমন ভোট কেন্দ্র! দেশে কি ভোট নেওয়ার আর জায়গা নেই!

এ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা রাজধারপুর গ্রামের বিলকিস বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধা বাংলানিউজকে বলেন, তাঁবুর নিচে ভোট লওয়া (নেওয়া) হচ্ছে- এইটা প্রথম দেখলাম জীবনে। এত রোদের ভেতর ভোট দিতে আমাগো খুব কষ্ট হইছে।  

একই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা রত্না বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূ বাংলানিউজকে বলেন, এইটা আবার কেমন ভোট নেওয়া? এ এলাকায় কি জায়গার অভাব? এটা মনে হচ্ছে ভোট কেন্দ্র নয়, যেন ভ্যান্না পাতার ঘর। আমরা তাঁবু ভোট কেন্দ্র দেখে আশ্চর্য হয়েছি।

এ কেন্দ্রে প্রার্থীদের এজেন্ট ইকরাম শেখ, রফিকুল ইসলাম ও নাইম হোসেন ছাড়াও কয়েকজন এজেন্ট বাংলানিউজকে বলেন, খোলা আকাশের নিচে ও প্রচণ্ড রৌদ্রের ভেতরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমরা। এদিকে, আমাদের জন্য বসারও কোনো জায়গা রাখা ছিল না। এছাড়া গ্রাম্য দু’কক্ষ বিশিষ্ট একটি ক্লিনিকের মধ্যে নারী-পুরুষদের ভোট গ্রহণের ব্যবস্থায় চরম ব্যাঘাত ঘটলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাডিং অফিসার মাসুদুর রহমান নিজ খরচে তাঁবু টাঙিয়ে আরও দু’টি কক্ষ তৈরি করে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু, আমাদের কোনো বসার জায়গা রাখা হইনি।  

এ ব্যাপারে ওই ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমার জীবনের এই প্রথম নিজ খরচে তাঁবু টাঙিয়ে ভোটারদের ভোট নেওয়ার জন্য কক্ষের ব্যবস্থা করেছি। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভোটারদের স্বার্থে আমি এ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছি।

তিনি দুঃখ করে বলেন, বসার জায়গা তো দূরের কথা পিপাসা লাগলে পানি খাওয়ার ব্যবস্থাটুকু নেই!

এ ব্যাপারে মধুখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ওই ভোট কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার এবিএম আজমল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ওই এলাকায় ওই স্থান ছাড়া ভোট নেওয়ার আর কোনো জায়গা নেই বিধায় সংকুলান ক্লিনিকের মধ্যেই ভোট নিতে বাধ্য হয়েছি। মানুষের কষ্ট আমরা অনুভব করে দুঃখ প্রকাশ করছি। আসলে এটা ইচ্ছাকৃত কোনো কাজ নয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।