ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেন কামরুল

সিনিয়র ও শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেন কামরুল নিহত শিক্ষার্থী বুলবুল

শাবিপ্রবি (সিলেট): শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নিহত শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তাকে ছুরিকাঘাত করেছিলেন কামরুল আহমেদ (২৯)।

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে এসএমপির জালালাবাদ থানায় প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান এসএমপির উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হলেও হত্যাকাণ্ডে ৩ জনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেও জানান তিনি। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া অপর দু’জন হলেন আবুল হোসেন (১৯) ও  মো. হাসান (১৯)।

ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বুলবুলকে আঘাত করেন। তাদের ফোন কল চেক করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্য কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি বিস্তারিত জানতে তদন্ত চলছে।

ঘটনার পর বুলবুলের বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুলবুলের বান্ধবীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি তার তার সাথে বুলবুলের সম্পর্ক ছিল, তারা সেখানে ঘুরতে যায়। এতে তাদের একা পেয়ে বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করে শুধু তার মোবাইল নিয়ে যায়, তবে সে এ হত্যাকাণ্ডের জড়িত আছে এমন কোনো আলামত জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া যায়নি।

বুলবুলের বান্ধবী কল লিস্ট কেন ডিলিট করেছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বান্ধবীর কাছে শুনেছে বুলবুলে লাশ বিকেলে ক্যাম্পাসে আনা হবে। তাই তার শেষ চেহেরাটা দেখার জন্য সে কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে। তবে পরে ক্যাম্পাস থেকে তাকে আটক করা হয়।

আজবাহার আলী বলেন, এ ঘটনার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা একাধিক দুষ্কৃতকারীর নামে থানায় এজাহার দায়ের করলে জালালাবাদ থানার মামলা নং-২৮/১৭৯, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০, রুজু করা হয়। এতে দায়েরকৃত মামলার ভিত্তিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনীয় তদন্ত ও আসামি গ্রেফতার অভিযান শুরু করে সন্দেহভাজন ৩ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের আটককৃত মো. আবুল হোসেন (১৯), সিলেট ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আটককৃত আবুল হোসেনের জবানবন্দীর ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত কামরুল আহমদ (২৯), মো. হাসানকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ঘটনার বিষয়ে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা উভয়ে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামি কামরুলকে আরো ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরি ও ভিকটিম বুলবুল আহমদ এর নিকট থেকে ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন নিয়ে তার বাসায় আছে বলে জানায়। পরে কামরুল বাড়িতে গিয়ে ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন এবং ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরি নিজ হাতে বের করে দেয়। তাৎক্ষণিক উক্ত আলামতগুলি সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে বিষদ তদন্ত চলমান রয়েছে।

জানা যায়, সোমবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় এক বান্ধবীর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থিত গাজী কালুর টিলায় ঘুরতে যান বুলবুল। পরে সেখানে অবস্থানকালীন সময়ে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে বুলবুল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, বুলবুল আহমেদ শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় (২০১৮-১৯ সেশন) বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে ২২৮ নম্বর রুমে থাকতেন এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি নরসিংদী সদরের চিনিশপুরম থানার নন্দিপাড়ার গ্রামের বাসিন্দা মো. ওহাব মিয়ার ছেলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।