ঢাকা, সোমবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জুন ২০২৪, ১৬ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সিলেট ওসমানী মেডিক্যালে আন্দোলনে ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক, সেবা ব্যাহত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২২
সিলেট ওসমানী মেডিক্যালে আন্দোলনে ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক, সেবা ব্যাহত

সিলেট: দাবি পূরণ হলেও চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

 তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মেডিক্যাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি মামলা করেছে কোতোয়ালি থানায়।

একটিতে মামলায় সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা আব্দুল্লাহকে এজাহারভুক্ত রেখে অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাপসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. হানিফ। অপর মামলায় বাদী হলেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত সহকারী মাহমুদুর রশীদ।

ওই মামলায় সাতজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জনকে রাখা হয়। এজাহার নামীয়রা হলেন- দিব্য, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। এছাড়া উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ নেতারা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন।

বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বৈঠক হলেও আন্দোলন থেকে সরে আসেননি শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বরং তারা চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

সমঝোতা বৈঠক শেষে হাসপাতালের পরিচালক ও আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাদের ৫ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্তত ৩০ জন পুলিশ মোতায়েন করতে এসএমপি কমিশনারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।  

তাছাড়া অভিযুক্তদের পাঁচজনের নাম দিয়েছেন তারা। তাদের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে বিভিন্ন জায়গা অভিযান চালানো হচ্ছে। পলাতকদের গ্রেফতারে পুলিশের তরফ থেকে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উল্টো পুলিশকে দোষারূপ করছেন, এমনটি জানালেন সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী মাহমুদ।  

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আন্দেলনরত শিক্ষার্থীদের সহনীয় হতে বলেছি। সেসঙ্গে যারা চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদেরও ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হামলায় আহত দুই ছাত্রদের সঙ্গে ইন্টার্ন একজন চিকিৎসকও আহত হয়েছেন। যে কারণে তারাও আন্দোলনে নেমেছেন।  

বর্তমানে হাসপাতালে ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আন্দোলনে থাকলেও মিড লেভেলের চিকিৎসকরা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।  

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা কিছুটা আবেগ তাড়িত হয়ে বক্তব্য রেখেছেন। আমরা তাদের সব যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়েছি। ইতোমধ্যে হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে কাজের পরিবেশ অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও তাদের কাজের পরিবেশ অব্যাহত থাকবে।  

সোমবার (০১ আগস্ট) সন্ধ্যা রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১০টায় সড়ক অবরোধ করেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা হাসপাতালের ফটকগুলো বন্ধ করে দেন। এতে করে রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।  

যদিও এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক বলেছেলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নয়, ফটক বন্ধ করে দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।  

এছাড়া হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- নগরীর মুন্সিপাড়ার মৃত রানা আহমদের ছেলে সাঈদ হাসান রাব্বি (২৭) ও কাজলশাহ এলাকার আব্দুল হান্নানের ছেলে এহসান আহমদ (২২)। দু’জনই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় সোমবার (১ আগস্ট) রাত ৩টায় আন্দোলনকারীরা আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিত রাখেন। কিন্তু বিকেলে বৈঠকে দাবি দাওয়া পূরণ না হওয়া এবং ওপর তিন আসামিকে ধরতে পুলিশের ওপর দোষ চাপিয়ে তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।