ঢাকা, শনিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সিওমেকের হামলার মামলায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২২
সিওমেকের হামলার মামলায় প্রধান আসামি গ্রেফতার

সিলেট: সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলার একটির প্রধান আসামি দিব্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পর বুধবার (৩ আগস্ট) রাত পৌনে ১টার দিকে নগরের উপকন্ঠ শাহপরাণ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি পুলিশ।

 

গ্রেফতারকৃত দিব্য সরকার সিলেট নগরের কাজলশাহ ৫২ নম্বর বাসার রমনীকান্ত সরকারের ছেলে। তিনি মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী।  

সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী মাহমুদ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিব্যকে শাহপরাণ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে থানায় আনা হচ্ছে।  

সোমবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা রাতে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন বহিরাগতরা। এ ঘটনায় ওইদিন রাত ১০টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।  

পরদিন মঙ্গলবার এ ঘটনায় দু’টি মামলা করে হাসপাতাল ও কলেজ প্রশাসন। একটিতে মামলায় সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজা আব্দুল্লাহকে এজাহারভুক্ত রেখে অজ্ঞাত ৩/৪জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাপসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মো. হানিফ।  

অপর মামলায় বাদী হলেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত সহকারী মাহমুদুর রশীদ। ওই মামলায় ৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জনকে রাখা হয়। এজাহার নামীয়রা হলেন-দিব্য, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি।  

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ নেতারা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন।  

বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বৈঠক হলেও মেডিক্যাল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়। তাদের অন্য দাবিগুলোও পূরণ করা হয় এবং এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়। এরপরও আন্দোলন থেকে সরে আসেনি শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বরং তারা সব আসামিদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ছাত্রদের হয়ে আন্দোলনে ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক আন্দোলনে সামিল হলে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়।
 
বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ফের হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ওই বিক্ষোভে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মিডলেভেল চিকিৎসক পরিষদও একাত্মতা পোষণ করেন। বেলা আড়াইটায় অবরোধ তুলে নিয়ে আন্দোলনকারীরা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করলে তারা হাসপাতালের সব সেবা বন্ধ করে দেবেন।  

আন্দোলনকারীদের পক্ষে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে ইন্টার্ন কর্মবিরতি চলছিল। এই কর্মবিরতি সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হওয়া আগ পর্যন্ত চলমান থাকবে। কলেজের সব ধরনের পরিক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছিলাম, সেটিও চলমান থাকবে। যে রাস্তাটি অবরোধ করেছিলাম, মানুষের সুবিধার্থে সেটি খুলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা জরুরি সেবা চালু রেখেছিলাম, কোনো সমাধান হয়নি। কিন্তু আগামীকাল সকাল ৮টার মধ্যে যদি সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার না হয়, রাস্তা, আউটডোর এবং হাসপাতাল বন্ধ করে দেবো। ’ 

এরপর আসামিদের ধরতে হন্য হয়ে অভিযান চালায় মহানগর পুলিশ। মধ্যরাতে কলেজ প্রশাসনের দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি দিব্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে এই ঘটনায় ৩ আসামিকে গ্রেফতার দেখালো পুলিশ।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।