ঢাকা, শনিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

আন্দোলন স্থগিত: কাজে ফিরলেন সিওমেক চিকিৎসকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২২
আন্দোলন স্থগিত: কাজে ফিরলেন সিওমেক চিকিৎসকরা

সিলেট: বহিরাগতদের হামলায় দুই ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনায় চলমান আন্দোলন স্থগিত করলো সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (সিওমেক) শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভা শেষে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তারা।

 

চলমান আন্দোলন আগামী এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুন্তাকিম চৌধুরী।  

তিনি বলেন, হামলার ঘটনার প্রধান আসামি দিব্যকে গতরাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজকের অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভিসি, পরিচালকসহ সকলেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করার দাবি জানান। তাই আমরা চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছি।

আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা বলেন, মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার হলেও অপর আসামিরা এখনও গ্রেফতার হয়নি। তাই আমরা আগামী এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করছি। একই সঙ্গে সকাল ১১টা ৩৫ মিনিট থেকে তারা কাজে যোগ দিয়েছেন বলেও জানান।

বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ধর্মঘট এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রেখে কাজে যোগ দিয়েছেন। তাদের প্রধান দাবি হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা। এরইমধ্যে প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন।  

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষার মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. মোর্শেদ আহমদ, ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া, ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. ময়নুল হক, সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ) ডা. হিমাংশু লাল রায়, মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ইন্টর্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে।  

পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত সোমবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা রাতে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে বহিরাগতরা। এ ঘটনায় ওই দিন রাত ১০টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরদিন মঙ্গলবার এ ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন। ঘটনার রাতে পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার দেখালেও আন্দোলন থেকে সরেননি শিক্ষার্থীরা। পরদিন মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ও ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ নেতারা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন। বৈঠকে তাদের সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও আন্দোলন অব্যাহত রাখা হয়।   

এ অবস্থায় চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদ। জরুরি বিভাগ ছাড়া সব বিভাগে সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যান তারা।

বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ফের হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা। ওই বিক্ষোভে সামিল হন মিডলেভেল চিকিৎসক পরিষদও। ওইদিন বেলা আড়াইটায় তারা আলটিমেটাম দেন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করলে হাসপাতালের সব সেবা বন্ধ করে দেবেন।

এ অবস্থায় বুধবার দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে নগরের উপকণ্ঠ শাহপরান এলাকা থেকে দু’টি মামলার একটির প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।  

গ্রেফতারকৃত দিব্য সরকার সিলেট নগরের কাজলশাহ ৫২ নং বাসার রমনীকান্ত সরকারের ছেলে। তিনি মহানগর ছাত্রলীগ কর্মী। তার গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করলেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২২
এনইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।