বরিশাল: বাক প্রতিবন্ধী শিশু আজিজুল ইসলাম আফাতের বয়স মাত্র ১২ বছর। এ বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, দাপিয়ে বেড়ানোর কথা খেলার মাঠ।
আফাতের ক্যান্সার আক্রান্ত বাবা সংসার চালাতে অক্ষম হওয়ায় সে ভ্যান চালিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাচ্ছে।
চাঁদশী গ্রামের মৃত লেহাজ উদ্দিন সরদারের মেয়ে আসমা বেগম জানান, তার স্বামী হালিম সরদার (৫০) পুরান ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার সোনা মিয়া সরদারের ছেলে। শশুড় সোনা মিয়া সরদার দ্বিতীয় বিয়ে করায় শাশুড়ি তার সন্তান হালিম সরদারকে রেখে অন্যত্র চলে যান। দীর্ঘদিন পর বিষয়টি আসমা বেগমের স্বামী হালিম সরদার জানতে পারেন।
আসমা বলেন, বাবার সব সম্পত্তি তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দেওয়ায় স্বামী কষ্ট নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ঢাকা ত্যাগ করে আমার বাবার বাড়ি গৌরনদীর চাঁদশী গ্রামে চলে আসেন। এরপর পরিবারের সবাই মিলে বাবার বাড়িতে ছোট্ট একটি টিনের ঘরে বসবাস শুরু করি। এলাকায় এসে আমার স্বামী হালিম সরদার ভাড়ায় তিন চাকার ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালানো শুরু করে। সাত মাস আগে হালিম হঠাৎ অসুস্থ্ হয়ে পরলে তাকে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করানো হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হালিমের গলায় থাকা টিউমারের স্থানে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপরই দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আমাদের পাঁচ সদস্যের সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।
তিনি আরও বলেন, আমরা অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। বাবার জমিতে বসবাস করছি। ঘরে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে। স্বামীর ক্যান্সার। এ অবস্থায় স্বামীর চিকিৎসা দূরের কথা পরিবারের খাবারই জুটছেনা। তাই বাধ্য হয়েই আমার জন্মগত বাক প্রতিবন্ধী শিশু সন্তান আজিজুল ইসলাম আফাতকে ভ্যান চালাতে দিয়েছি।
আসমা জানান, প্রথম দিকে ঢাকায় ও বরিশালের হাসপাতালে স্বামীর চিকিৎসা করালেও এখন টাকার অভাবে তা বন্ধ। ছেলের প্রতিবন্ধী কার্ড থাকলেও অনলাইন করতে না পারায় দীর্ঘদিন ধরে ভাতা বন্ধ।
এ অবস্থায় অসহায় আসমা বেগম তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামীর সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং অভাবী পরিবারের জন্য সাহায্য পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
এমএস/এসএ