ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রুমনের মরদেহ না নেওয়ার পেছনে ইন্ধন রয়েছে: ডিসি তেজগাঁও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২২
রুমনের মরদেহ না নেওয়ার পেছনে ইন্ধন রয়েছে: ডিসি তেজগাঁও ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক

ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে চুরির মামলায় গ্রেফতার আসামি রুমন শেখের আত্মহত্যার ঘটনায় মরদেহ নিতে আসছে না তার পরিবার। ফলে মরদেহ না নেওয়ার পেছনে ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

শনিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

তিনি বলেন, শনিবার (২০ আগস্ট) রাতে ময়নাতদন্ত শেষে যুবকের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর সম্ভব হয়নি। রোববার (২১ আগস্ট) রুমনের স্ত্রী তার ভাই এবং শ্যালককে ফোন দেওয়া হলেও তারা কেউ আসেনি। এছাড়া বিভিন্ন সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের ব্যবহৃত ফোনটি অন্যকে দিয়ে রিসিভ করিয়েছেন।  

ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, রুমন শেখের মরদেহ নেওয়ার জন্য প্রপার গার্ডিয়ান না পাওয়া পর্যন্ত মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের হিমঘরে রাখা হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত মরদেহ না নিচ্ছে, ততক্ষণ থাকবে। এছাড়া মরদেহ না নেওয়ার প্রক্রিয়াটি যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে রাখা হয়েছে।  

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি আজিমুল হক বলেন, গত শনিবার আমার বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা রুমন শেখের পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়েছেন। তারা ফোন ধরে আসছি, আসবো করছেন। অনেক সময় ফোনও ধরছেন না। মরদেহ নিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন তারা। তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছেন।

অজানা কারণে মরদেহ নিতে বিলম্ব করছে উল্লেখ করে আজিমুল হক বলেন, এ বিষয়ে তারা রহস্য তৈরির চেষ্টা করছে। মরদেহ না নেওয়ার পেছনে কেউ ইন্ধন দিচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

পরিবার দাবি করছে সকালে থানায় গিয়ে তারা রুমনের জন্য নাস্তা দিয়েছে। এরপর থানা থেকে বলা হয় আসামিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। আপনারা আদালতে যান। আদালতে গিয়ে জানতে পারে রুমন আত্মহত্যা করে মারা গেছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বলেন, তাদের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সুমনকে মারধর করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল মো. জাকারিয়া।  

এছাড়া তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, গত ১৫ আগস্ট ইউনিলিভারের পিওরইট থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় মামলার পর আল-আমিন, সোহেল রানা ও অনিক হোসেন নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। তারা এখন কারাগারে আছেন। ওই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রুমন শেখকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে রামপুরা মহানগর এলাকার বাসা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাসা থেকে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। এরপর অভিযান শেষে রাত ১১টার দিকে তাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়। শুক্রবার দিনগত রাতে রাত ৩টা ৩২ মিনিটে সুমন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে লোহার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এ ফুটেজ নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২২
এসজেএ/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।