ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অ্যাম্বুলেন্সে করে ডাকাতি, সাড়ে ৩৪ লাখ টাকা লুট!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
অ্যাম্বুলেন্সে করে ডাকাতি, সাড়ে ৩৪ লাখ টাকা লুট!

রাজশাহী: রাজশাহীতে অভিনব কায়দায় অ্যাম্বুলেন্সে করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

ডাকাতরা পান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সাড়ে ৩৪ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

তবে এ ঘটনার ছয় ঘণ্টার মধ্যে সেই ডাকাতদেরকে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ।

সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে তাদেরকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।  

এ সময় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) মো. মজিদ আলী।

তিনি জানান, রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। তবে এই ঘটনার ৬ ঘণ্টার মধ্যে সংঘবদ্ধ ছয় ডাকাত গ্রেফতার করেছে আরএমপির শাহ মখদুম থানা পুলিশ।  

এ সময় আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতির সময় লুট করা টাকার মধ্যে ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার হয়। সেসঙ্গে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সটিও জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার পূর্ব মোল্লাপাড়ার মহল্লার রাজ্জাকের ছেলে আশিক ইসলাম (২৪), আজাদ আলীর ছেলে মো. হৃদয় (২৪), রাজপাড়া থানার আলীগঞ্জ মধ্যপাড়ার মহল্লার আসলাম আলীর ছেলে আব্দুর রহমান (২১), আসলামের ছেলে মো. আব্দুর রহিম (২০), ডিঙ্গাডোবা ঘোষ মাহাল মহল্লার মো. লোকমানের ছেলে রিকো ইসলাম (২১) ও চন্ডীপুর সুফিয়ানের মোড়ের মৃত এবাদুলের ছেলে মো. ইয়ামিন (২০)।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মজিদ আলী বলেন, মহানগরীর পবা থানার একলাছ মোল্লাসহ ৮৫ জন পান ব্যবসায়ী একটি সমিতি গঠন করে রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর থানার দাওকান্দি বাজারে পানের ব্যবসা করতেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পান কিনেন এবং তা ঢাকার শ্যামবাজারে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করেন।

২১ আগস্ট ভোর সোয়া ৫টার দিকে রায়হান আহম্মেদ (২৬), শহিদুল ইসলাম (৩০) ও আমিনুল ইসলাম (২৭) ঢাকায় পান বিক্রি করার ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা নিয়ে শিরোইল বাস টার্মিনালে পৌঁছান। সেখান তারা সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ভাড়া করে দাওকান্দি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এক সময় তারা লক্ষ্য করেন যে, তাদের অটোরিকশাকে একটি নীল রঙের অ্যাম্বুলেন্স অনুসরণ করছে।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মহানগরীর শাহ মখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে পৌঁছালে পেছন থাকা সেই অ্যাম্বুলেন্সটি হঠাৎ সামনে এসে তাদের গতিরোধ করে। অটোরিকশা থামার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাম্বুলেন্স থেকে ৬-৭ জন ডাকাত বের হয়ে ধারালো চায়নিজ কুড়াল, হাসুয়া, চাকু, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় রায়হান পালানোর চেষ্টা করে। ডাকাতরা তাকে ধরে মারধর করে তার কাছে থাকা ১৪ লাখ ২৭ হাজার টাকাসহ অন্যদের কাছে থাকা মোট ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা ডাকাতি করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আম চত্বরের দিকে পালিয়ে যায়।

পরে একলাছ মোল্লা তখনই থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আরএমপি কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানের নির্দেশ দেন। পরে তার সার্বিক নির্দেশনায় শাহ মখদুম জোনের ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নূরে আলমের নেতৃত্বে সহকারী পুলিশ কমিশনার সুকুমার মোহন্ত, শাহ মখদুম থানার ওসি মেহেদী হাসান থানা পুলিশের একটি টিম নিয়ে দ্রুত অভিযান শুরু করেন।

এর আগে, শাহ মখদুম থানা পুলিশ আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সসহ আসামিদের শনাক্ত করে। এরপর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া মোট টাকার মধ্যে ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার হয়। সেসঙ্গে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সটি জব্দ করা হয়।  

অবশিষ্ট টাকা উদ্ধার ও সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।