ঢাকা, শুক্রবার, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৪ মে ২০২৪, ১৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ডাক্তার ধার করে চিকিৎসা চলে চাঁপাই কারা হাসপাতালে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
ডাক্তার ধার করে চিকিৎসা চলে চাঁপাই কারা হাসপাতালে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ধার করে ডাক্তার এনে চিকিৎসা চলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার হাসপাতালে। অসুস্থ বন্দিদের চিকিৎসার জন্য ১২ শয্যার এ হাসপাতালের নিজস্ব কোনো চিকিৎসক নেই।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে একজন চিকিৎসককে সেখানে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে।  

এ হাসপাতালের রোগীদের ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। জনবল সংকটে বন্দি রোগীরা পান না কাঙ্খিত সেবা।

তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এই কারাগারে বর্তমানে ৯২৬ বন্দি রয়েছেন। বন্দিদের কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালের নিজস্ব কোনো চিকিৎসক নেই। এই হাসপাতালে একজন সহকারী সার্জন, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন নার্স পদের মধ্যে শুধু ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। সহকারী সার্জনের পদটি দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে। ছয় মাস আগে বদলি হওয়ায় নার্স পদটিও শূন্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে একজন চিকিৎসককে এই হাসপাতালে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে। বিশেষ করে জটিল রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসা করাতে গিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং সময় নিয়ে বন্দি রোগীদের অন্য হাসপাতালে নিতে হয়। এতে করে সময় ও লোকবল দুটোই নষ্ট হয়।

শুধু চিকিৎসক সংকটই নয়, জেলার এ কারাগারে হাজারের ওপরে বন্দির জন্য মাত্র ১২টি বেড রয়েছে। এতে করে অসুস্থ বন্দিদের বেড পেতেও সমস্যা হয়।

জেলা কারাগারে সংযুক্ত সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের চিকিৎসক ডা. শহিদুল ইসলাম বলেন, কারা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৯০ থেকে ১০০ জন রোগী দেখতে হয়। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় তাকে একাই সব সামাল দিতে হয়। ইসিজি ছাড়া প্যাথলজিক্যাল বা অন্য কোন পরীক্ষার সুযোগ নেই হাসপাতালে। তাকে একাই পুরুষ এবং নারী উভয় ওয়ার্ডে রোগী দেখতে হয়। জটিল কোনো সমস্যা হলে বা পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হলে বন্দি ব্যক্তিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়।

এ প্রসঙ্গে জেলা কারাগারের সুপার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, জেলা কারাগারের জন্য অনুমোদিত একজন সহকারী সার্জন, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন নার্স পদ রয়েছে। এখানে শুধু ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। চিকিৎসক ও নার্স দুটি পদই শূন্য। একজন চিকিৎসককে সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তিনিই চিকিৎসা দিচ্ছেন।  

বন্দিদের বাইরে নিতে গিয়ে সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। প্রয়োজনে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে সহায়তা চাওয়া হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জেলা কারাগারে সংকট থাকেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরও শূণ্য পদগুলোতে চাহিদার অনুপাতে লোকবল না পাওয়ায় অন্যান্য জেলার মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা কারাগারের এ হাসপাতালে সংকট থেকেই যায়। তাই বাধ্য হয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে একজন ডাক্তার তাদের দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।