ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১ হাজার টাকার জন্য অটোরিকশা চালককে হত্যার অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
১ হাজার টাকার জন্য অটোরিকশা চালককে হত্যার অভিযোগ

বরিশাল: পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে শাহ আলম (৪০) নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে মারধর ও হত্যার অভিযোগ উঠেছে সুজন খান নামে বরিশাল নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।

কিন্তু পুলিশ বলছে, নিহতের ময়নাতদন্ত ও ঘটনার তদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়।

এদিকে, ঘটনার পর থেকে সন্ধান নেই সুজনের। তার ফোনও বন্ধ, যে কারণে সুজনের সঙ্গে কথা বলাও সম্ভব হয়নি।

নিহত শাহ আলম (৪০) বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাউলাকাঠী এলাকার মোসলেম হাওলাদারের ছেলে। তিনি নগরীর রসুলপুর কলোনীতে বসবাস করতেন।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ জানান, রোববার (২৯ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে মৃত অবস্থায় শাহ আলমকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিয়মানুযায়ী হাসপাতালের লাশ রাখার কক্ষে শাহ আলমের মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে, শাহ আলমের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই স্বজনরা তাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন। পরে মরদেহের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত হয়। সে হিসেবে সোমবার (২৯ আগস্ট) সকালে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল করে। এরপর শাহ আলমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

ময়নাতদন্তকারীরা জানিয়েছে, সঠিক সময়ে কাগজপত্র হাতে না পাওয়ায় তারা কোনো কাজ করতে পারেননি। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে শাহ আলমের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে।

নিহতের দুই ছেলে শুভ ও শান্ত জানান, তাদের বাবা সিএনজি অটো রিকশা চালালেও আগে নগরের পোর্টরোডস্থ সুজন বাণিজ্য ভাণ্ডার নামে একটি ফলের  আড়তে কাজ করতেন। আড়তটি নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুজন খানের।

শাহ আলমের কাছ থেকে সুজন এক থেকে দেড় হাজার টাকা পাওনা ছিলেন বলে দাবি করে আসছিলেন। এ টাকার জন্য সুজন রোববার রাত ১১টার দিকে তাদের বাড়ি আসেন লোকজন নিয়ে। তাদের বাবাকে জোর করে আড়তে নিয়ে যান। সেখানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাদের বাবাকে মারধর করেন সুজন ও তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে শাহ আলমকে গুরুতর অবস্থায় একটি রিকশায় তুলে হাসপাতালে যেতে বলেন তিনি। তাদের অটোরিকশাটিও দখল করে নিয়েছেন ছাত্রদলের এ নেতা।

পথে শাহ আলম বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়দের কাছে থেকে এ খবর পেয়ে শুভ ও শান্ত তাকে উদ্ধার করে শেবাচিমে নিয়ে যান। পরবর্তীতে বাবার অটোরিকশার সন্ধান করে না পাওয়ার দাবিও করেন তারা।

এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে না পেয়ে সুজনের আড়তে গিয়ে তার খোঁজ করা হয় । তিনি সেখানে ছিলেন না।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, আমরা প্রথমে শুনেছিলাম গতরাত ৩টার দি‌কে রিকশায় ক‌রে বাসায় যাওয়ার পথে রসুলপুর ব্রিজে অসুস্থ হ‌য়ে পড়েন শাহ আলম। এরপর রিকশা চালক তা‌কে নি‌য়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে স্বজন‌দের জানতে পারি তাকে মারধর করা হয়েছিল। যে কারণে তার মৃত্যু হয়। স্বজনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাহ আলমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।