ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গার্ডার দুর্ঘটনায় ১২ কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২
গার্ডার দুর্ঘটনায় ১২ কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: ঢাকা বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার দুর্ঘটনার ১২ কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।


 
রোববার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, নথিপত্র পর্যালোচনা এবং এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে দুর্ঘটনার জন্য ১২ কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি।

১. পূর্বানুমতি ছাড়া জাতীয় শোক দিবসে সরকারি ছুটির দিনে কাজ করা হয়েছিল। ওই দিন কাজ করার অনুমতি ছিল না।

২. প্রথমবারের মতো দিনের বেলায় গার্ডার স্থানান্তর করা হয়। দিনের বেলায় সেদিনই প্রথম কাজ করে। অথচ দিনের বেলা কাজ করার অনুমতি নেই। রাত ৮টার পর কাজ শুরুর কথা।

৩. ক্রেনটি সহকারী অপারেটর/হেলপার চালাচ্ছিলেন।

৪. লাইসেন্স না থাক।

৫. দুর্ঘটনার সময় ক্রেনের জায়গা ছিল অসমতল।

৬. ক্রেনটির ডিজিটাল মনিটর ছিল না। ডিজিটাল মনিটর থাকলে স্ক্রিনে দেখা যেত।

৭. কাজের পূর্বানুমতি ছিল না।

৮. সুনির্দিষ্ট ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা ছিল না। ভারী কাজ করার সময় ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কাজে কেউ ছিল না।

৯. ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের যোগ্যতা না থাকা।

১০. যারা কাজ করতে এসেছিলেন তাদের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার যোগ্যতা না থাকা।

১১. জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ছিল না।

১২. ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের নিয়োগ অনুমোদিত ছিল না।

সংবাদ সম্মেলনে আমিন উল্লাহ নুরী আরও বলেন, ওই দিনের দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিজিজিসি দায়ী। তাদের অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইপিসিএম ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩৪টি চিঠি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাঠায় জানিয়ে সচিব বলেন, শুধু চিঠি পাঠানো নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য যথেষ্ট ছিল না। নিরাপত্তার জন্য প্রকল্প এলাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত পরিদর্শন ও তদারকি রাখা প্রয়োজন ছিল।

কী ধরনের শাস্তি হতে পারে জানতে চাইলে সচিব বলেন, তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট করে শাস্তির সুপারিশ করে না। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী তাদের শাস্তি হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘নো সেফটি নো ওয়ার্ক’— এই নীতিতে আমরা এগোচ্ছি।

গত ১৫ আগস্ট বিকেলে উত্তরা জসীম উদ্দীন রোডের মাথায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের একটি বক্সগার্ডার ট্রেইলারে তোলার সময় ভারসাম্য হারায় ক্রেন। বিপুল ওজনের কংক্রিটের গার্ডারটি টঙ্গীমুখী সড়কে চলমান একটি প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে। ভারী গার্ডারের চাপে চ্যাপ্টা হয়ে যায় প্রাইভেট কারটি। এতে প্রাইভেট কারের ভেতরেই মৃত্যু হয় পাঁচজনের। দুজনকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় হাসপাতালে। হাতহতরা সবাই একই পরিবারের সদস্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২২/আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।