ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘পেট ভরে খেতে পারি, তবে নিরাপদ খাদ্য প্রয়োজন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
‘পেট ভরে খেতে পারি, তবে নিরাপদ খাদ্য প্রয়োজন’ ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপোতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার | ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: মঙ্গা কাটিয়ে আমরা এখন পেট ভরে ভাত খেতে পারি। তবে আমাদের এখন পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

তিনি বলেন, অনিরাপদ খাদ্যকে আমরা খাদ্য হিসেবেই ধরতে চাই না। যে খাদ্য খেয়ে মানুষের রোগ হয়, যে খাদ্যে মানুষের সমস্যা হয়, তাকে আমরা খাদ্য হিসেবেই ধরতে আগ্রহী নয়। খাদ্য যে কোনো সময়ই অনিরাপদ হতে পারে। এজন্য যারা ফুড প্রসেসিং করে, তাদেরও সচেতন থাকতে হবে। অনেকে খাবারে খাদ্যরঙের পরিবর্তে সাধারণ রং ব্যবহার করে। এদিক থেকে আমাদের সচেতন হতে হবে। বর্তমানে ৮টি বিভাগে আটটি ল্যাবরেটরি তৈরি হচ্ছে এবং নারায়ণগঞ্জে বিশ্বমানের ল্যাবরেটরি নির্মাণ হচ্ছে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জরিমানা বা আইন প্রয়োগ করে অনিরাপদ খাদ্যের বিষয়টা সবসময় ঠিক রাখা সম্ভব না। আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। আমরা খাদ্য রপ্তানি করছি। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে নিজেদের আলাদা জায়গা তৈরি করতে পারিনি। এটি আমাদের নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমেই করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে ল্যাব এক্সপো আমাদের অনেক সাহায্য করবে বলেই আমি আশা করি।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপোতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী। এক্সপোটির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

পরীক্ষাগারের কাজ ও গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের পরীক্ষা ও নিরাপদতার মান ব্যবস্থাপনায় হালনাগাদ অগ্রগতিগুলোর বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, গবেষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন কৃষি বিভাগ-সমর্থিত বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (বিটিএফ) প্রকল্প যৌথভাবে দেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়।



আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার। অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপ-প্রধান হেলেন লাফেভ, বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলেশন প্রজেক্টের চিফ অব পার্টি মিসাইল জে পার।

প্রদর্শনীতে ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি পরীক্ষাগারের পাশাপাশি, ৬টি উপকরণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কৃষি ও খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষায় তাদের সক্ষমতা তুলে ধরে।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরীক্ষাগারের গুরুত্ব এবং বাংলাদেশ কীভাবে তাদের কাজে লাগিয়ে খাদ্যপণ্যের নিরাপদতার মান নিশ্চিত করে বৈদেশিক বাণিজ্য বেগবান করতে পারে, বৈজ্ঞানিক আলোচনা পর্বে বিশেষজ্ঞদের একটি দল তা তুলে ধরে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জৈষ্ঠ সচিব জিয়াউল হাসান তার বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলোকে সরকারি পরীক্ষাগারগুলোর পরিপূরক হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে তথ্য ভাগাভাগি এবং একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী পরীক্ষাগার নেটওয়ার্ক এবং সরকারি বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতাই পারে খাদ্য পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে যেকোনো উদ্বেগ দূর করে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করতে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে দেশের পরীক্ষাগারগুলোকে কারিগরি সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য মার্কিন কৃষি বিভাগকে ধন্যবাদ জানান অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। স্থানীয় খাদ্য নিরাপদতার মানদণ্ডে আন্তর্জাতিকভাবে অত্যাবশ্যক পরিপালনগুলো আত্মস্থ করতে সব পরীক্ষাগারের সঙ্গে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় জোরদারে এ প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাগাভাগি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের পরীক্ষাগারগুলোর আন্তর্জাতিক মান অর্জনে মার্কিন সরকারের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লাফেভ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, যথাযথ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার, সরকারী-বেসরকারী অংশীদার ও অংশীজনদের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয়ের ভিত্তিতে খাদ্যপণ্যের নিরাপত্তা মানদণ্ড প্রয়োগ করে প্রতিষ্ঠান। খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রয়ের বিভিন্ন ধাপে সংশ্লিষ্টদের প্রক্রিয়া, চর্চা ও পরিপালনের নজারদারি, নিয়ন্ত্রণেও একই কথা প্রযোজ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।