ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ না, তবে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। আগে মানুষ এক দিন, দুই দিন খেতে পারতো না।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আদর্শ প্রাণীসেবা লি. এর উদ্যোগে ‘প্রাণিসম্পদ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি ও প্রাণিবীমা সম্প্রসারণে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তির ভূমিকা: আমাদের অবস্থান ও করণীয়’ সম্পর্কিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখনো ২০ ভাগ মানুষ বা তারো বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার হিসাবে এটি প্রায় ৩ কোটি। আগে, মাথাপিছু জমি ছিল ২৮ ডেসিমেল, এখন সেটি কমে ১০ ডেসিমেল হয়েছে। ছোট থেকেই আমরা দেখেছি গ্রামে মায়েরা দুধ, ডিম বাজারে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কাজেই, আমরা যেটি বলছি তাদের আয় কম।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, আমরা যদি টেকসই উন্নয়ন করতে চাই, অর্থনীতির কোন কোন খাতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে, সেটি নির্ধারণ করতে হবে। প্রাণিসম্পদের অবদান জিডিপিতে ২ শতাংশ হলেও এর গুরুত্ব অনেক বেশি। এই খাতের প্রচুর সম্ভাবনা আছে। স্কিলড লেবার দিয়ে যদি লাইভস্টক খাতটা পরিচালনা করা যায়, এই খাত অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এসডিজি সূচকের সবগুলো শর্তই আমরা ২০১৫ সালের মধ্যে অর্জন করেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় ৩০ সালের মধ্যে ৫ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
মন্ত্রী বলেন, আজকে আপনারা ইন্স্যুরেন্সের কথা বলছেন। একটা গাভীর দাম এখন ৮-১০ লাখ টাকা। এছাড়া একটা গাভী কতটা ভালনারেবল সেটা বিবেচনায় নিলে অবশ্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ। ইন্স্যুরেন্স কতটা গ্রাহকবান্ধব সেটিও আমাদের বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, সারের দাম ইতিহাসে সর্বনিম্ন আছে। বিএনপির আমলে ৯২ টাকার সার এই সরকার ক্ষমতায় এসে ১৬ টাকায় নিয়ে এসেছে। এই যে খাদ্যে এত উন্নতি, এটি আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ফলেই সম্ভব হয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজকে খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ে কথা হচ্ছে, এই যে খাদ্যের এত দাম, আমি যদি সারেই ভর্তুকি দিই, তাহলে খাদ্যে ভর্তুকি আমি কেন দেব? গত ৩ বছরে হ্যাচারি মালিকেরা একদিনের মুরগির একটি বাচ্চাও বিক্রি করতে পারে নাই। কাজীর মতো ফার্ম ১ লাখ মুরগির বাচ্চা পুঁতে ফেলেছে। বলতে চাই, ডিমের দাম সাময়িক, এটা কমে যাবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, ২০৪১ সালে দেশ একটি উন্নত দেশ হবে। যার একটি গরু আছে, সেও উন্নত দেশের নাগরিক হবে। কৃষি উদ্যোক্তাদের কৃষি ঋণ পরিশোধে অ্যাটিচিউড চেঞ্জ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিমার ব্যাপারে আমরা সচেতন না। বিমাবান্ধব হতে হবে। এদেশে ৮১টি বিমা কোম্পানি আছে। কিন্তু, সে অনুপাতে পলিসি গ্রহণ করছে না মানুষ। জিডিপিতে বিমার অবদান মাত্র ০.৫ শতাংশ। আমরা এই খাতে পিছিয়ে আছি।
শাইখ সিরাজ বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, ইন্স্যুরেন্সের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশে কৃষি একটা বড় ভূমিকা রাখলেও, এই খাতে ইন্স্যুরেন্স তত বেশি জনপ্রিয় না। আদর্শ প্রাণীসেবা এটা নিয়ে কাজ করছে।
এর আগে, দুটি সেশনে বিভক্ত আলোচনা সভার প্রথম সেশনে আলোচনা করেন ব্যাংক এশিয়ার সাবকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী, ড. মো. গোলাম রাব্বানী, ইমপ্যাক্ট বিজনেসের নির্বাহী সহকারী চেয়ারম্যান শুভাশীষ বড়ুয়া, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কায়সার হামিদ, বেসিসের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম ফাহিম মাশরুর।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২
এমকে/এমজেএফ