ফরিদপুর: ফরিদপুরের জেলা সদরসহ সদরপুর, চরভদ্রাসন, আলফাডাঙ্গা উপজেলার পদ্মা ও মধুমতি নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। দুইবার নদীর ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েছেন।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গী খেয়াঘাট, গোলডাঙ্গী, উস্তাডাঙ্গী এবং ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গীর কমপক্ষে তিনটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েক হাজার একর ফসলি জমি এবং প্রায় চার শত বাড়ি-ঘর বিলীন হয়েছে।
গত ৭ দিনে শুধুমাত্র ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের ৭০-৮০টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে প্রায় দেড়শত পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছেন।
ইতোমধ্যে, পদ্মার ভাঙনে গত পাঁচ মাসে উস্তাডাঙ্গী ও গোলডাঙ্গীর আরও দুইটি গ্রামের প্রায় দুইশত পরিবার গৃহহারা হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঘর হারিয়ে তার আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তার পাশের ঝুঁপড়িতে।
হুমকীর মুখে আছে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাউবোর গোলডাঙ্গী ব্রীজ, সরকারী তিনটি রাস্তা, চরটেপুরাকান্দি সরকারি স্কুল, ক্লিনিক ও মসজিদ।
অপরদিকে, জেলা সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের আইজউদ্দীন মাতুব্বর ডাঙ্গী, তাইজউদ্দীন মাতুব্বর ডাঙ্গী, ভুঁইয়া বাড়ির ঘাট, ধলারমোড়, সিঅ্যান্ডবি ঘাট, ট্রলারঘাট, খেয়াঘাটেও ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে।
এছাড়া, মধুমতি নদীর তীব্রতা বাড়ায় জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের দিগনগর এলাকার স্বপনগর নামে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এখানকার নদী রক্ষা বাঁধের ৯০০ মিটারের বাঁধের মধ্যে ৭০০ মিটার বাঁধ মধুমতির বুকে বিলিন হয়ে গেছে।
এদিকে, প্রচণ্ড ভাঙনের মুখে পড়ে জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের সবুল্ল্যা শিকদার ডাঙ্গী, জাকেরর হুরা, শিকদার ডাঙ্গীর তিনটি গ্রাম পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া সদরপুর উপজেলার চরনাসিরপুর, দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া, আকোটেরচর এলাকাগুলো পদ্মা নদীর ভাঙনের মুখে পড়ে উপজেলার মানচিত্র থেকে ৪০টি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠা শতাধিক ডাঙ্গী এখন পদ্মার বুকে।
ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৈশলী পার্থ প্রতীম সাহা বাংলানিউজকে জানান, ভাঙন রোধকল্পে ধারাবাহিকভাবে কাজ চলছে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসন বলছে, গৃহহীন পরিবারের সব ধরনের সহযোগীতা দিতে কাজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
এফআর