ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রূপগঞ্জে বাড়িঘর ভাঙচুর-গুলি, এলাকায় আতঙ্ক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২২
রূপগঞ্জে বাড়িঘর ভাঙচুর-গুলি, এলাকায় আতঙ্ক

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মীরকুটিরছেও এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর চালিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রোববার (২ অক্টোবর) গ্রেফতার তিন জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন—কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর থানার সয়সতী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে ইসমাইল, করিমগঞ্জ উপজেলার কান্দারকামাটিয়া এলাকার জালাল মিয়ার ছেলে রাকিব ও শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানার সেনেরচর এলাকার শাহআলমের ছেলে সোহাগ মিয়া। গ্রেফতার তিন জনই রূপগঞ্জের কর্ণগোপ ও নাগেরবাগ এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেলসহ তার লোকজনের সঙ্গে মাছিমপুর এলাকার ইউপি সদস্য তাওলাদ হোসেনসহ তার লোকজনের বিরোধ রয়েছে। শনিবার রাতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যোগে গোলাকান্দাইল নাগেরবাগ এলাকায় ফিরছিলেন কয়েকজন যুবক।

এ সময় একটি ফিলিং স্টেশন থেকে তেল নিয়ে মোটরসাইকেল এবং প্রাইভেটকার যোগে নিজ এলাকা মাছিমপুরে ফিরছিলেন ইউপি সদস্য তাওলাদ গ্রুপের শাকিল ও সোলাইমান নামে দুই যুবক। কর্ণগোপ এলাকায় পৌঁছালে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলটির ধাক্কা লাগে। এতে উভয় পক্ষের লোকজন আহত হন। এ নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় থাকা যুবকদের সঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহী শাকিলের তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটার এক পর্যায়ে শাকিলকে ছুরিকাঘাত করেন ওই যুবকরা। শাকিলদের সঙ্গে থাকা প্রাইভেটকারও ভাঙচুর করা হয়।

ইউপি সদস্য তাওলাদ গ্রুপের লোকজন খবর পান তাদের গ্রুপের শাকিলকে ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেলের লোকজন কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এমন খবরে উত্তেজিত হয়ে তাওলাদের লোকজন ভাইস চেয়ারম্যানের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালালে উভয় পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করা হয়। এতে মাছিমপুর, মীরকুটিরছেও, পাড়াইন, নার্সিংগলসহ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাড়াইন এলাকার মিজানের ছেলে রবিনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। উভয় পক্ষের গুরুতর আহত শাকিল ও রবিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেল বলেন, ঘটনার সূত্রপাত অন্য এলাকার লোকজনের সঙ্গে। সেখানে আমার কোনো লোক ছিল না। পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার অফিসসহ আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লোকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। গুলি করে আতঙ্কের সৃষ্টি করা হয়েছে।

অন্যদিকে ইউপি সদস্য তাওলাদ অভিযোগ করে বলেন, যেই প্রাইভেটকারটি ভাঙচুর করা হয়েছে সেই প্রাইভেটকারে আমার থাকার কথা ছিল। পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার পান্না সোহেলের লোকজন। গাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। আমি স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকায় শান্তি চাই।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, আহত শাকিলের মা রেহানা বেগম বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়েছি। এখন পর্যন্ত আরেক পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। তাদের অভিযোগ পেলেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২২
এমআরপি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।