ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তালাবদ্ধ ঘরে পড়েছিল বৃদ্ধ দম্পতির গলিত লাশ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
তালাবদ্ধ ঘরে পড়েছিল বৃদ্ধ দম্পতির গলিত লাশ! মৃত দম্পতির বাড়িতে পুলিশ ও উৎসুক জনতা।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচরে একটি তালাবদ্ধ ঘরে আবু ছিদ্দিক (৭৩) ও আতরের নেছা (৬২) নামের দুইজনের অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। তারা দুইজনই স্বামী-স্ত্রী।

 

সোমবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পচা দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা তাদের মরদেহের খবর জানতে পারে। পরে মরদেহ উদ্ধারের ব্যবস্থা করে পুলিশ।  

পুলিশ বলছে, মরদেহের গলায় কাপড় পেঁচানো রয়েছে। দুর্বৃত্তের হাতে খুন হয়েছেন তারা। তবে কী কারণে খুন হয়েছেন, সে রহস্য উদঘাটন করা যায়নি। ঘটনাস্থলে সিআইডি পুলিশকে ডাকা হয়েছে।  
 
বৃদ্ধ এ দম্পতি জেলার সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের উত্তর শাকচর গ্রামের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছৈই মিঝি বাড়ির বাসিন্দা। তারা নিঃসন্তান। তবে তাদের একটি পালক ছেলে রয়েছে।  

নিহত আবু ছিদ্দিকের ভাতিজা আবদুল হান্নান বাংলানিউজকে বলেন, আমার জেঠা আবু ছিদ্দিক এবং জেঠি আতরের নেছা একতলা ভবনে একাই বসবাস করতেন। আজকে রাতে ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে তাদের মৃত্যুর বিষয়টি বাড়ির লোকজন জানতে পারে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ঘরে ঢুকে তাদের গলিত মরদেহ দেখতে পায়।  

তিনি বলেন, আমার জেঠা আবুধাবী প্রবাসী ছিল। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি বাড়িতে আছেন। তাদের কোনো সন্তান ছিল না। কিন্তু আবদুর রহিম নামে এক পালক ছেলে রয়েছে। ১৫ বছর থেকে রহিম এ বাড়িতে বসবাস করেন না। বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন তিনি। বিগত কয়েক বছর থেকে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।  

শাকচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খাটের ওপর বৃদ্ধ দম্পতির গলিত মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনাকে হত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেউ ঘরে প্রবেশ করে তাদের দুইজনকে হত্যা করে মরদেহ রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ দ্রুত হত্যাকারীকে খুঁজে বের করবে।  

এদিকে বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যুর খবরে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেন।  

রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল থেকে বলেন, মরদেহের গলায় কাপড় পেঁচানো আছে। দুইজনের দেহ খাটে পড়েছিল। মরদেহ দেখে মনে হচ্ছে, ৪ থেকে ৫ দিন আগে শ্বাসরোধ করে কেউ তাদের হত্যা করেছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করা হবে।  

পুলিশ সুপার বলেন, ভবনের গেট তালাবদ্ধ এবং দরজা ভেতর থেকে আটকানো ছিল। তবে চাদের দরজা খোলা পেয়েছি। ঘরের ভেতর থেকে কোনো জিনিসপত্র খোয়া গেছে কিনা-সেটাও দেখা হচ্ছে।  

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সদস্যরা এসে আলামত সংগ্রহ করবে। মরদেহ অনেকটাই গলে গেছে। ডোম এসে মরদেহ উদ্ধার করবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।