ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা রাস্তায় দেখলেই ভেঙে ফেলা হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা রাস্তায় দেখলেই ভেঙে ফেলা হবে

ফেনী: ফেনীতে সরকার দল ও পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কতিপয় দুষ্কৃতিকারীর টোকেন বাণিজ্যের আওতায় বিনা রেজিস্ট্রেশন ও ডেট ফেল সিএনজি অটোরিকশা আটক এবং ডাম্পিং করে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব বাহন রাস্তায় দেখলেই ভেঙে ফেলা হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর উদ্যোগে ফেনীর সড়ক-মহাসড়কে পরিবহন চাঁদাবাজি ও যানজট নিরসনে আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

ফেনী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভা থেকে জানা গেছে, জেলায় রেজিস্ট্রেশনকৃত সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ৯ হাজার ২০০। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া এ বাহনের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এসব রেজিস্ট্রেশনহীন ও ডেট ফেল সিএনজি অটোরিকশা কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ও চাঁদাবাজ এবং অসাধু পুলিশের কাছ থেকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে বিভিন্ন স্টিকার, কার্ড নিয়ে শহরজুড়ে চলাচল করছে। ব্যবসায়ী সমিতির নামে চাঁদা নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি শহরে রাস্তায় যত্রতত্র হকার ও রিকশাভ্যানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বসিয়েছে।

পৌরসভার ইজারাদারের রিসিট দিয়ে অলিগলি লাঠি বাহিনী চাঁদা তুলছে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহীপাল এলাকায় উড়াল সেতুর নিচে বিশৃঙ্খলভাবে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো ও প্রকাশ্যে চাঁদা তোলা হচ্ছে। বিআরটিসির বাস তার নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়িয়ে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি করছে।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে যেসব বিষয় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়, সেগুলো হলো- সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি, টোকেন বাণিজ্য বন্ধ ও ফুটপাত দখল মুক্ত করতে আগামী রোববার পর্যন্ত সময়সীমা দিয়ে মাইকিং; আগামী সোমবার হতে সাঁড়াশি অভিযান; ফেনী পৌরসভার ইজারাকৃত বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড দাউদুপুর; হাসপাতাল মোড়; মদিনা বাস স্ট্যান্ড সংশ্লিষ্ট এলাকা ছাড়া সড়কে পরিবহণ চাঁদাবাজ পেলে গ্রেফতার; মহাসড়কের মহীপাল এলাকায় রাস্তার উপর বিআরটিসিসহ যেসব বাস যাত্রী ওঠানো-নামানো করবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও মহীপালে টিকিটের টংঘর উচ্ছেদ করা। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনো সিএনজি অটোরিকশা শহরে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজিম, মহাসড়ক পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন পরিবহণ সংগঠনের নেতাগণ।

জরুরি সিদ্ধান্ত গ্রহণ শেষে পৌরসভা মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, পরিবহণ চাঁদাবাজি ও টোকেন বাণিজ্যের সাথে পৌরসভা বা তার দলের কেউ জড়িত নয়। মহীপাল বাস টার্মিনাল সংস্কার ও অস্থায়ীভাবে বাস কাউন্টার করে দেওয়া হবে। এ সময় চাঁদাবাজি ও টোকেন বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করেন তিনি।

ফেনীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, এমন অপরাধে (চাঁদাবাজি ও টোকেন বাণিজ্য) পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সভায় উপস্থিত সকলে শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকলে ফেনীতে পরিবহন চাঁদাবাজি ও যানজট নিয়ন্ত্রণ নয়; বন্ধ করাই সম্ভব। পুলিশ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবে।

ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা করে চাহিদা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনহীন সিএনজি অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
এসএইচডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।