ঢাকা, শনিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

অনিয়মের অভিযোগ ও সদস্যদের অনাস্থায় পদ হারালেন ইউপি চেয়ারম্যান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২২
অনিয়মের অভিযোগ ও সদস্যদের অনাস্থায় পদ হারালেন ইউপি চেয়ারম্যান অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়া ইউপি সদস্যরা

দিনাজপুর: দিনাজপুরের বিরামপুরে বিভিন্ন অনিয়ম ও সদস্যদের অনস্থা প্রস্তাবে এক ইউপি চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।  

সোমবার (৩১ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে বিরামপুর উপজেলার দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।

সরকারি চাল আত্মসাৎ, অনৈতিকভাবে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয় ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিশেষ সভায় অনাস্থা প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে গৃহীত হওয়ায় চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।

একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার আইন মোতাবেক চেয়ারম্যানের পদটি শূন্যের গেজেট প্রকাশ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, দিওড় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মিয়ার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের সভার কার্যবিবরণী লেখা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়ার সুপারিশের ক্ষেত্রে উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার, ভিজিডি ও ভিজিএফের ৫৭ বস্তা চাল বিতরণ না করে আত্মসাতের উদ্দেশে রেখে দেওয়া, ভিজিএফের চাল বিতরণের ট্যাগ অফিসার ও ইউপি সদস্যদের অবহিত না করা, ট্যাক্স বাবদ আদায়কৃত ৩৩,৩৭৭ টাকা নিজের কাছে রাখার অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের নয়জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব দেন। এছাড়া তদন্তেও এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ এর ৩৯ ধারা অনুযায়ী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার বিরামপুর, দিনাজপুর কর্তৃক বিশেষ সভা আহ্বান করে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে গোপন ভোট নেওয়া হয়। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে নয়টি ভোট পড়ে, যা দুই তৃতীয়াংশের বেশি।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ হওয়ায় এবং অনাস্থা প্রস্তাবটি দুই তৃতীয়াংশের বেশি ভোট গৃহীত হওয়ায় জনস্বার্থে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করা এ চেয়ারম্যানের জন্য সমীচীন হবে না। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের পাঠানো অনাস্থা প্রস্তাবটি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ এর ৩৯ (১৩) ধারা অনুযায়ী অনুমোদিত হয়েছে। এজন্য বিধান অনুযায়ী দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মিয়ার পদটি একই আইনের ৩৫(১)(চ) ধারা অনুযায়ী শূন্য ঘোষণা করা হলো।

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯ এর ৩৫(২) ধারা মোতাবেক শূন্য ঘোষণা সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এ আদেশ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে জারি করা হলো এবং অবিলম্বে তা কার্যকর হবে।

এর আগে অনাস্থা প্রস্তাবের পাশাপাশি চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে সাবেক দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ওই ইউনিয়নের এক হাজারের বেশি মানুষ উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে স্মারকলিপি দেন।  

এ বিষয়ে দিওড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল বলেন, আমি ঢাকায় আছি। পদ শূন্যের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করছি। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিধি মোতাবেক দিওড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।