ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

এসআই পরিচয়ে ডাকাতি করতেন জসিম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২২
এসআই পরিচয়ে ডাকাতি করতেন জসিম দুই সহযোগীসহ ডাকাত সর্দার জসিম মোল্ল্যাকে আটক করেছে র‌্যাব

ঢাকা: পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়ে ছদ্মবেশে ডাকাতি করতেন ডাকাত সর্দার জসিম মোল্ল্যা (৩৫)। ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের গুরুতর জখম করতেন তিনি।

আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার জসিম ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

ডাকাত সর্দার জসিমের দুই সহযোগী হলেন—জাহিদুল কাজি (২৫) ও মো. ইয়াসিন (৩০)।

আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি স্বর্ণের চেইন, ১টি রুপার ব্রেসলেট, ২টি ল্যাপটপ, পুলিশের এসআই র‌্যাংক ব্যাজসহ ২টি হাফ শার্ট, ২টি প্যান্ট, ২টি ক্যাপ, ২টি বেল্ট, ১টি ওয়াকিটকি, ২ জোড়া কালো বুট, ১টি রিফলেকটিং জ্যাকেট, ২টি রেইন কোর্ট, ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি চাপাতি, ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ৩টি লোহার ফোল্ডিং স্টিক, ১টি ড্রিল মেশিন, ২টি স্ক্রু ড্রাইভার, ১টি রেঞ্জ, ২টি হাতুরি, ১টি কাটার মেশিন, ২টি প্লাস, ১টি প্লাস কাটার, ৬টি লোহার রডের টুকরা, ১টি করাত, ২টি ছেনি কাটার, ১টি দূরবীন, ১টি ল্যান্ড ফোন সেট, ১টি ডিজিটাল ওয়েট মেশিন, ৩টি মাউস, ৫টি কাটার ব্লেড, বাংলাদেশ পুলিশ লিখিত ১টি লেমিনেটিং কাগজ, নারী ছদ্মবেশ ধারণের পরচুলা, ৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫৩ হাজার ৫০ টাকা জব্দ করা হয়।

বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে কেরানীগঞ্জে র‍্যাব-১০-এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. ফরিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব-১০-এর একটি দল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় একটি অভিযান চালায়। অভিযানে পুলিশ ছদ্মবেশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার ও তার প্রধান দুই সহযোগীকে আটক করা হয়।

আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, আসামিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবত ঢাকা, নরসিংদী, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের ছদ্মবেশে এবং ডাকাতির অভিপ্রায়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করতো। তারা বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা নিতো এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের হত্যা ও গুরুতর জখম করতো।

ডাকাত সর্দার জসিমের বিষয়ে এডিশনাল ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন বলেন, আসামি জসিম মোল্ল্যা আন্তঃজেলা দুর্ধষ ডাকাত দলের সর্দার। তার নেতৃত্বাধীন ডাকাত দল শরিয়তপুরের জাজিরাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একটি ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছিল। জসিম শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকায় চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর রিপন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। পুলিশের পোশাক পরিধান করে এসআই পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিতো ডাকাত সর্দার জসিম। জাজিরা এলাকায় সে ছিলা এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। জসিম মোল্ল্যার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রতারণা, মারামারি ও হত্যাচেষ্টাসহ মোট ১৩টি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় জসিম সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

জাহিদুল ও ইয়াসিন ডাকাত সর্দার জসিম মোল্ল্যার প্রধান সহযোগী। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সম্পদশালী ও প্রবাসীদের বাড়ির ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডাকাত সর্দার জসিমকে দিতো। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জসিম মোল্ল্যা তার দলসহ ডাকাতি করতো। আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২২
এমএমআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।