নিউইয়র্ক: বাংলাদেশকে ‘অনাবিষ্কৃত রত্নভাণ্ডার’ হিসাবে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, আগামী এক দশকে বিশ্বের ১১টি অগ্রসরমান অর্থনীতির অন্যতম একটি হবে বাংলাদেশ।
‘গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার ৫ থেকে ৬ শতাংশে অবস্থান করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা স্টেট ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
স্টেট ম্যাগাজিনের ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় এক নিবন্ধে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক কনসাল অগনিয়ানা ইভানোভা আরো বলেছেন, চীনের শ্রমিক মজুরি বেড়ে যাওয়ার কারণে তৈরি খাতে আরও সুবিধাজনক অবস্থানে যাবে বাংলাদেশ।
পোস্ট অব দ্য মানথ ক্যাটাগরিতে বিশেষ গুরুত্বের সাথে ছাপা এই নিবন্ধের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে- ‘ঢাকা, ইউএস হেলপস প্রোমোট গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’।
প্রতিবেদনে কূটনীতিক অগনিয়ানা ইভানোভা উল্লেখ করেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর গণতন্ত্রের পথে অনেক চড়াই উৎড়াই পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ। দারিদ্র ও হত্যাযজ্ঞ থেকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের ১৫৩ মিলিয়ন মানুষ সহিংস উগ্রবাদের বিপরীতে মধ্যমপন্থি ও অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রকে বেছে নিয়েছে যা, এতদ্বাঞ্চলের স্থিতিশীলতাকেই ত্বরান্বিত করছে।
গোটা বিশ্বে খ্যাতিসম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘গোল্ডম্যান স্যাকস’ এর বরাত দিয়ে এই কূটনীতিক বলেন, ‘বিশ্বের অনেকেই বাংলাদেশকে আজ অনাবিস্কৃত রতœভাণ্ডার হিসেবে দেখছে। ’
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে প্রতিযোগিতামূলক শ্রমশক্তি, স্থায়ী প্রবৃদ্ধি ও রেমিটেন্স বাংলাদেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় বাংলাদেশে সামগ্রিক খাতে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। বোয়িং, শেভরন, জেনারেল ইলেক্ট্রনিক্স, কনোকোফিলিপস এর মতো বাঘা বাঘা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগে অধীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে, বলেন ইভানোভা।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে মার্কিন এই কূটনীতিক বলেন, এই খাতে ২০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে বাংলাদেশ, যা মোট রপ্তানি আয়ের তিন-চতুর্থাংশ। এই খাতে তিন মিলিয়নেরও বেশি শ্রমশক্তির বেশীরভাগই নারী।
সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন খাতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্বমূলক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেসরকারি খাতেও উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে বলে নিবন্ধে উল্লেখ করেন ইভানোভা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এনজিও কাজ করছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্ষুদ্র ঋণ, ব্যাংকিং সল্যুশনসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিশ্বের বৃহত্তম উৎসদেশ হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করছে।
বাংলাদেশে একটি অগ্রসরমান অনলাইন কমিউনিটিরও সৃষ্টি হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এই সাবেক কূটনীতিক। তিনি বলেছেন, সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের উজ্জীবিত অনলাইন কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ রাখে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসও।
বাংলাদেশ সময় ০১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৪