নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গতানুগতিক রিপোর্ট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবছরের মতো এবারেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এখানে শ্রমিকের অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে, শিশুশ্রম রয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় স্টেট ডিপার্টমেন্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতি বছরই সারা বিশ্বে মানবাধিকার চর্চা বিষয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করে প্রকাশ করছে।
রিপোর্টের নির্বাহী সারসংক্ষেপে বাংলাদেশে ২০১৩ সালের মানবাধিকার চর্চা সম্পর্কে বলা হয়েছে- মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল যথেচ্ছ গ্রেফতার, অনলাইনে মত প্রকাশে বাধা এবং অনুন্নত কর্ম পরিবেশ ও শ্রম অধিকারহীনতা।
এছাড়া রয়েছে বিচার বহির্ভূত হত্যা, অযৌক্তিকভাবে ডিটেনশন, বিচার বিভাগের দুর্বলতা এবং বিচারপূর্ব দীর্ঘ আটকাবস্থা প্রসঙ্গ।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের ব্যক্তি অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে, রাজনৈতিকভাবে প্রণোদিত সহিংসতা এবং অব্যাহত সরকারি দুর্নীতি মারাত্মক সমস্যা হিসেবেই রয়ে গেছে।
কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) তাদের কাজকর্মে অনানুষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
এছাড়া নারীর প্রতি বৈষম্য, বাধ্যতামূলক শিশুশ্রম, নারী ও শিশু পাচার, প্রতিবন্ধীদের প্রতি বৈষম্যমুলক আচরণের কথা রয়েছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গতভাবে সংখ্যালঘুদের উপর সামাজিক সহিংসতা অব্যাহত ছিল, যদিও অনেক সরকারি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ দাবী করেছেন, নেহাত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণেই ঘটেছে এবং বিষয়টিকে সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের বিয়ে, নারী-পুরুষ বৈষম্য, সরকারি দুর্নীতিসহ আরও কিছু সমস্যা রয়েই গেছে, বলছে পররাষ্ট্র দফতরের রিপোর্ট।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আইনের শাসনে দুর্বলতা মানবাধিকার লংঘনের সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে, নাগরিকদের অধিকার চর্চায় বাধা সৃষ্টি করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় মামলা পরিচালনা এবং তদন্তে সমন্বিত উদ্যোগ বাংলাদেশে দেখা যায়নি বলেও উল্লেখ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশ সময় ০৯২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৪