নিউইয়র্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্ক আসার বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি।
অপরদিকে তাকে স্বাগত জানিয়ে পাল্টা সমাবেশ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টে নামেন।
এয়ারপোর্টে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন। মিসেস মোমেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র আগমনের প্রতিবাদে এয়ারপোর্টের বাইরে মুজিবুর রহমানসহ অন্যদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি। তারা শেখ হাসিনা বিরোধী নানা স্লোগান দেন। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে একই স্থানে সমাবেশ করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানের কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এয়ারপোর্ট থেকে ম্যানহাটানের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।
হোটেলে লবিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, ২০০০ সালে যখন এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছিলো, তখন বিশ্বের সরকার প্রধানদের মধ্যে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এখন যখন বাংলাদেশ এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দ্বারপ্রান্তে তখনও বাংলাদেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। এ প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের ৬৯ তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূণ।
অধিবেশনের ফাঁকে সাইডলাইনে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাইডলাইনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূণ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় নরেন্দ মোদী বলেছেন ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ তৈরি করেছেন। তার এ কথাই আসলে নির্ধারণ করে দুই দেশের সম্পর্ক কি।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন বলে জানান শাহরিয়ার আলম।
এর আগে রোববার রাত নয়টা ৪৫ মিনিটে শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের আইজি, তিন বাহিনীর প্রধান। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, খাদ্যমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হোসেন তওফিক ইমাম, অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দীপু মণি।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, সিনিয়র সচিব, প্রেসসচিব, পররাষ্ট্র সচিব, নৌ, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও শ্রমসচিবসহ, উচ্চ পর্যায়ের বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিকগণ ছাড়াও রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে (সাইডলাইনে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কাতারের আমীর তামিম বিন মোহাম্মদ আল থানি, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী মিস এরনা সলবার্গ, বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াসনিকোভিচ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন।
২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান এবং ২৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার দেওয়া অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সফর শেষে ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ছাড়ার পর ৩০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর লন্ডনে ২ দিনের যাত্রাবিরতি করে ২ অক্টোবর সকালে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
** নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
** জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
** জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী - See more at: http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/326530.html#sthash.hPCIXt8A.dpuf
বাংলাদেশ সময়: ২২০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪