নিউইয়র্ক: জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক শুরু হতে আরও কয়েক ঘণ্টা বাকি। তবে অধিবেশনের আগেই মঙ্গলবার বেশ ব্যস্ত সময় কাটালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ মহাসচিবের ডাকে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বেশ দক্ষ ও কার্যকর অংশগ্রহণ ছিলো প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যায় বক্তব্যের বেশ প্রশংসাও পেলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিশ্ব নেতাদের সম্মানে তার ও ফার্স্ট লেডির দেওয়া অভ্যর্থনায় এ প্রশংসার বাণী শোনান শেখ হাসিনাকে। অন্যদিকে বারাক ওবামার দেওয়া বক্তব্যেরও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের কার্যকর অংশগ্রহণ আর বিশ্বের নেতারা এ বিষয়ে কে কি বলছেন সে ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আর সে কারণেই তিনি তার সফরসঙ্গী মন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও নির্দেশ দিয়েছেন তারা যেনো বক্তব্যগুলো মনযোগ দিয়ে শোনেন।
তারই একটি প্রমাণ পাওয়া গেলো মঙ্গলবার সকালে। জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনীতে অংশ নেন শেখ হাসিনা সকাল ৮টায়। সেখান থেকে হোটেল স্যুটে ফিরে আবার আসেন সম্মেলনে। দীর্ঘসময় বসে থেকে অর্ধ ডজনেরও বেশি বিশ্ব নেতার বক্তব্য শোনেন।
এসময় তার পাশে বসেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন।
এক পর্যায়ে নিজের পালা এলে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার মিনিটের বক্তব্য ঠিক তিন মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে শেষ করেন তিনি। বিশ্ববাসীর প্রতি অঙ্গীকার করেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর চেয়ে কার্বন নিঃস্বরণে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবেই।
বক্তব্য শেষ। এদিকে পরবর্তী কর্মসূচি একটি পূর্ব নির্ধারিত দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরিন সলসবর্গের সঙ্গে ওই বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি যখন উঠে যাচ্ছিলেন তখন তার সঙ্গে উঠে যেতে চাইছিলেন অন্যরাও। কিন্তু আটকে দিলেন প্রধানমন্ত্রীই। তাদের উদ্দেশ্যে বললেন, আপনারা সিট ছাড়বেন না। বক্তব্যগুলো শুনুন। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর কেবল পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিবেশমন্ত্রী ও জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত সঙ্গী হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বাকীরা বসে থাকেন তাদের নিজ নিজ আসনে। মনোযোগ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও এর ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে বিশ্ব নেতাদের বক্তৃতা শোনেন।
ওদিকে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ফিরে আসেন জলবায়ু সম্মেলন কক্ষে। সেখানে ফিরে তিনি আবারও শুনতে থাকেন বিশ্ব নেতাদের বক্তব্য। প্রায় দুপুর পর্যন্ত বক্তব্য শোনেন, এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাদের বক্তব্য দেন। বারাক ওবামা জলবায়ু ইস্যুতে গ্লোবাল প্যাক্ট করার ওপর জোর দেন। তার বক্তব্য ভীষণ প্রশংসিত হয়। আর সন্ধ্যায় যখন সামনা সামনি দেখা হয় তখন সরাসরি প্রশংসার সুযোগটুকুও হাতছাড়া করেন নি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে আসা মন্ত্রীরা জলবায়ু সম্মেলন ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বেকারত্ব ও কাজের সুযোগ সৃষ্টি নিয়ে একটি আলোচনায় বক্তব্য রাখেন। এছাড়া পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইউএস-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সুযোগ বিষয়ক একটি গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া আরও একটি বাণিজ্য বিষয়ক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি।
** পরস্পরের বক্তব্যের প্রশংসায় হাসিনা-ওবামা
** বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তিতে জোর দিলেন বারাক ওবামা
** বিরূপ জলবায়ু মোকাবেলায় লড়ছি, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
** ২০১৫ সালে অর্থবহ জলবায়ু চুক্তির আহ্বান জাতিসংঘে
** জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততা শুরু মঙ্গলবার
** বিএনপির বিক্ষোভ, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে আ’লীগের সমাবেশ
** নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
** জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪