নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজার ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রক্রিয়ার প্রথম কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার স্থানীয় সময় দপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ‘কমিউনিটি ভিশনিং ওয়ার্কশপ’-এর মাধ্যমে ডাইভার্সিটি প্লাজাকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার পাশাপাশি প্লাজা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কমিউনিটির মতামত ও প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
প্লাজার সৌন্দর্য ও সুযোগ-সুবিধা বর্ধনে এ মতামত ও প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
স্থানীয় কাউন্সিল মেম্বর ড্যানিয়েল ড্রম, নিউইয়র্ক সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশন, ডিপার্টমেন্ট অব ডিজাইন অ্যান্ড কন্সট্রাকশন, স্থানীয় এনজিও ছায়া সিডিসি, সুখি এনওয়াই ও ফ্রেন্ডস অব ডাইভার্সিটি প্লাজা যৌথভাবে এ কর্মশালাটির আয়োজন করে।
নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিল মেম্বর ড্যানিয়েল ড্রম স্বাগত বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, জ্যাকসন হাইটসের প্রাণকেন্দ্র ৭৩ ও ৭৪ স্ট্রিটের মাঝখানে অবস্থিত ৩৭ রোডের ওপর অবস্থিত ডাইভার্সিটি প্লাজা ইতোমধ্যেই এর নামের সার্থকতা ও বৈচিত্র্যময় ব্যবহারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, কিন্তু একে আরো জনপ্রিয়, সব কমিউনিটির অংশগ্রহণমূলক ও উপভোগ্য একটি জায়গা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্থায়ী কিছু উন্নয়নমূলক কাজে হাত দেওয়ার জন্য ক্যাপিটাল মানি থেকে শুরু করে ছোট-বড় বিভিন্ন রকম তহবিল সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছি। কিন্তু এর সত্যিকার বাস্তবায়নের জন্য শুধুমাত্র অর্থ দিয়ে হবে না। আপনাদের মতো সব কমিউনিটর সব পর্যায়ের মানুষের মতামত ও প্রস্তাবনা জানা দরকার।
ড্যানিয়েল ড্রম সবার অংশগ্রহণে আনন্দিত হয়ে বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি যে, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্লাজার প্রতিবেশী নাগরিক, ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, সাউথ এশিয়ান-হিসপ্যানিক, সব ধরনের মানুষজনকেই দেখতে পাচ্ছি। এই সার্থক আয়োজনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
আশা করি, আপনাদের সবার মতামতের ভিত্তিতে ডাইভার্সিটি প্লাজাটি সত্যিকার অর্থেই দেখবার মতো একটি জায়গা হয়ে উঠবে ও দেশ-বিদেশের পর্যটকের জন্য এই প্লাজা তথা জ্যাকসন হাইটস দর্শনীয় একটি স্থান হিসেবে চিহ্নিত হবে।
ড্রমের বক্তব্যের পর পরই একে একে বক্তব্য রাখেন- সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশনের কমিউনিটি কো-অর্ডিনেটর এন্ড্রু রোনান, ছায়া সিডিসি’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সিমা আগনানি, ফ্রেন্ডস অব ডাইভার্সিটি প্লাজার প্রেসিডেন্ট শেখর কৃশনান, সুখি এনওয়াই’র প্রেসিডেন্ট আগা সালেহ প্রমুখ।
আয়োজকদের বক্তব্য শেষে নিউইয়র্ক সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ডিজাইন অ্যান্ড কন্সট্রাকশনের পক্ষে স্থপতিদের একটি দল প্লাজার বর্তমান সুযোগ-সুবিধাগুলো কী কী আছে এবং এতে কী কী আরো যুক্ত করা যায়, এ রকম প্রস্তাবনা পাওয়ার পয়েন্টে প্রেজেন্ট করেন।
প্রদর্শনী শেষে সবাইকে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে প্রত্যেকে তাদের নিজেদের মতো করে কে কী নতুন সুযোগ-সুবিধা ও সৌন্দর্য প্লাজায় দেখতে চান, তা প্লাজার ম্যাপের ওপর লিখে অথবা অংকন করে দেখানোর অনুরোধ জানানো হয়।
এ সময় অংশগ্রহণকারীরা মোট ১২টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আলোচনা করেন এবং পরবর্তীতে প্রত্যেক গ্রুপ তাদের প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন।
জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন নেতারা এ সময় তাদের প্রস্তাবনায় প্লাজা এলাকায় একটি স্থায়ী শহীদ মিনারের প্রস্তাবটি যুক্ত করেন। পাশাপাশি ৭৩ স্ট্রিট থেকে ব্রডওয়েতে বামে মোড় নেওয়ার সুবিধা, পুলিশ ক্যাম্প, ক্যানপি বসানো ইত্যাদির দাবিও জানান তারা।
অনুষ্ঠানটির সহআয়োজক সংগঠনগুলো হচ্ছে- ইয়ুথ কংগ্রেস অব বাংলাদেশি আমেরিকানস, অধিকার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস (বিপা), জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন, মানাং সমাজ ইউএসএ, এনআইসিই, কুইন্স কমিউনিটি হাউজ, সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ অ্যাকশন, তিব্বেটান কমিউনিটি অব নিউইয়র্ক, ইউনাইটেড শেরপা, ওয়ালুং কিডুগ, নেইবারহুড প্লাজা পার্টনারশিপ, সিনেটর হোসে পেরাল্টা, এসেম্বলিম্যান ফ্রান্সিসকো মোয়া, জ্যাকসন হাইটস গ্রিন অ্যালায়েন্স, জ্যাকসন হাইটস বিউটিফিকেশন গ্রুপ, মেইক কুইন্স সেফার, কমিউনিটি বোর্ড ৩, কুইন্স প্রাইড ইত্যাদি।
জ্যাকসন হাইটস ও এই প্লাজাটি বাংলাদেশি ও অন্যান্য সাউথ এশিয়ানদের নানানভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়াতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ও সাউথ এশিয়ানদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
সমাপনীতে ডিপার্টমেন্ট অব ডিজাইন অ্যান্ড কন্সট্রাকশনের স্থপতিদের দলটি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সবার প্রস্তাবকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ও প্লাজার সার্বিক অবস্থাকে মাথায় রেখে প্লাজার উন্নয়নের জন্য একটি নকশা তৈরি করা হবে। এরপর আরেকটি কর্মশালার মাধ্যমে মূল্যায়নের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এরপর ২০১৬ সাল নাগাদ নকশা অনুযায়ী ‘ডাইভার্সিটি প্লাজা’র নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
** ডাইভার্সিটি প্লাজা হচ্ছে স্থায়ী পাবলিক প্লেস
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৪