নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের একজন শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর ব্যক্তিগত তথ্য ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সংরক্ষিত অভ্যন্তরীণ গোপন নথি সংগ্রহে এফবিআই’র সাবেক এক এজেন্টকে ঘুষ দেওয়ার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশি তরুণ রাজীব আহমেদ সিজার (৩৫)।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এ তথ্য জানিয়েছে।
নিউইয়র্কের হোয়াইটপ্লেনে ফেডারেল কোর্টের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট-এর বিচারক ভিনসেন্ট এল ব্রিককেট্টি’র সামনে রাজীব এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
রাজীবের সহযোগী জোহানেস থালেরও (৫১) একই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আদালতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য বের করতেই রাজীব ওই ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন বলে তখনই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর বের হয়।
এবার আদালতে নিজেই বিষয়টি স্বীকার করে নিলেন রাজীব।
রাজীব ও থালের দুজনেই কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের সাবেক কর্মকর্তা রবার্ট লাস্টিকের সঙ্গে এ ঘুষ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন। এদের তিন জনের বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ক্রিমিনাল ডিভিশনের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লেসলি আর ক্যাডওয়েল, ইউএস অ্যাটর্নি পিট ভেরেরো এবং জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ইন্সপেক্টর জেনারেল মাইকেল ডি হরোইটজ ১৭ অক্টোবর (শুক্রবার) বিষয়টি জানানোর পর জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র শীর্ষ এক নেতার ছেলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রাজীব আহমেদ বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
এফবিআইকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় প্রথম গ্রেফতারের সময় রাজীবের বাবা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, দল ও আদর্শের জন্য কাজ করতে গিয়েই তার ছেলে এ বিপদের মুখে পড়েছে।
সে সময়ে নিউইয়কের্র বাংলাদেশি কমিউনিটির সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ করতেই রাজীব আহমেদ এফবিআইকে ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন। এ অপরাধে রাজীব ও থালেরকে ৩৫ বছরের কারদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে বলে সংবাদ সংস্থা এপি’র এক খবরে জানা গেছে। আগামী বছরের ২৩ জানুয়ারি আদালতে শুনানির দিন ধার্য্ করা হয়েছে।
রাজীব ও থালের স্বীকারোক্তিতে আরো বলেছেন, লাস্টিকের বন্ধু থালের সহযোগী রাজীব আহমেদ বাংলাদেশের একজন শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তি সম্পর্কে গোপন তথ্য, নথি খোঁজ করেন।
রাজীব জানান, বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তি তার নিজের রাজনৈতিক আদর্শের বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত থালের ও লাস্টিক সিজারের কাছে গোপন তথ্য ও নথি সরবরাহের বিনিময়ে অর্থ দাবি করে। এছাড়া, বাংলাদেশের অন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ খারিজ হয়েছে, তার সম্পর্কেও তথ্য চায় রাজীব।
আদালতের স্বীকারোক্তিতে তিনি আরো বলেন, এ সম্পর্কে তারা অনেক টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদান করেন; যেখানে রাজীবকে এককালীন ৪০ হাজার এবং প্রতিমাসে ৩০ হাজার ডলার দিতে হবে, এমন চুক্তিপত্রের কথাও আদান প্রদান হয়। কথা ছিল এর বিনিময়ে লাস্টিক ও থালের রাজীবকে তাদের কাছে থাকা তথ্য সরবরাহ করবেন।
এমন কি সিজারের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে চাপ প্রয়োগের বিভিন্ন কৌশলের কথাও ওই টেক্সট মেসেজে ছিল।
লাস্টিকের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর।
মামলাটি জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ইন্সপেক্টর জেনারেল তদন্ত করেন এবং ট্রায়াল অ্যাটর্নি এমিলি রে উডস, সহকারী ইউ এস অ্যাটর্নি বেঞ্জামিন অ্যালি শুনানি করেন।
** জয়ের তথ্য পেতেই এফবিআইয়ে ঘুষ, আদালতে স্বীকার বিএনপিকর্মীর (আপডেট)
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৪