নিউইয়র্ক: সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলা ও যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনে নতুন অস্ত্র স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট পাচ্ছে এবার নিউইয়র্ক পুলিশ। বিশেষ প্রোগ্রামিংয়ের আধুনিক এ প্রযুক্তির স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটে রিয়েল টাইম ডাটা, ওয়ারেন্টের তথ্যসহ সন্দেহভাজন বা নিখোঁজ ব্যক্তির ছবি, অপরাধ দমনের পোস্টার থাকবে।
পাশাপাশি পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা ব্যক্তির ছবিসহ ফেডারেল, স্টেট এবং সিটি এই তিন প্রশাসনিক অবকাঠামোর ডাটাবেজের তথ্যও হাতের মুঠোয় পাবে পুলিশ। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকেই এই নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার হবে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আর এজন্য ১৬০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে নিউইয়র্ক সিটি।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল ব্লাজিও গত শনিবার (২৫ অক্টোবর) স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, অপরাধ মোকাবেলায় ও আরো নিখুঁতভাবে নিউইয়র্ককে সন্ত্রাসী হামলা থেকে রক্ষা করতেই একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী আধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্রে নিউইয়র্ক পুলিশকে আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে।
‘জরুরি অবস্থায় প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তা সিটির যেকোনো প্রান্তের অপরাধের প্রতি মুহূতের্র নিখুঁত তথ্য ও আপডেট পাবেন এই স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের মাধ্যমে। ’
মেয়র ব্লাজি আরো জানান, নিউইয়র্ক সিটির ৩৫ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা স্মার্টফোন এবং পুলিশের ৬ হাজার টহল কারের জন্য ৬ হাজার ট্যাবলেট দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আধুনিক এ প্রযুক্তিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের জরুরি ‘৯১১’ কল মুহূর্তেই একসঙ্গে ৩৫ হাজার স্মার্টফোন এবং টহল কারের ট্যাবলেটে পৌঁছাবে। জরুরি সাহায্যের জন্য তারা কেন্দ্র থেকে খবরের অপেক্ষা করবে না। তারা ঘটনাস্থলের সার্বিক তথ্য ও পরিস্থিতি দেখতে পাবেন।
পুলিশ কমিশনার বিল ব্রাটন এ সময় বলেন, এই প্রযুক্তি পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে মুহূর্তেই ‘ক্রিটিক্যাল’ তথ্য পেতে সাহায্য করবে, যা অপরাধ দমনে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবেলার মাধ্যমে নিউইয়র্ক সিটির নাগরিকদেরকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, এছাড়া এই স্মার্টফোনে বিশেষ প্রোগ্রামিং থাকছে, যা মাত্র দু’বছর আগেও কল্পনা করা যায়নি। পথেঘাটে যেকোনো অপরাধ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই হোক অপেক্ষাকৃত নিরপেক্ষ ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম’ এ সহায়ক হবে এ প্রযুক্তি।
‘শক প্রুফ ও ওয়েদার প্রুফ’ কভার, কোমরে ঝোলানো ফিতার সঙ্গে বাঁধা ‘স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট’ কর্মসূচিতে ব্যয়ের অর্থ আসবে অপরাধের আদায়কৃত জরিমানা এবং উদ্ধারকৃত অর্থ থেকে।
পুলিশ কর্মকর্তারাও এই আধুনিক প্রযুক্তিতে খুশি। তবে এর মধ্য দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের গতিবিধিও নজরদারীতে থাকবে কিনা সে প্রশ্নও কেউ কেউ তুলেছেন বলে সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার ব্রাটন বিষয়টিকে স্বীকার করে নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার জন্যই তারা কোথায় কী করছেন সে বিষয়টিও নজরে থাকবে।
যদি পুলিশ কর্মকর্তারা বিপদে পড়েন এবং তাদের অবস্থান জানতে না পারেন, তাহলে তাদের সঠিক অবস্থান জানতে ও বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে এই প্রযুক্তি সাহায্য করবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৪